• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্ত্রীর নামে সম্পদ, দুদকে ফাঁসলেন বাখরাবাদ ও পাউবোর কর্মকর্তা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জুন ৪, ২০২৪, ০৮:৩১ এএম
স্ত্রীর নামে সম্পদ, দুদকে ফাঁসলেন বাখরাবাদ ও পাউবোর কর্মকর্তা

অবৈধ উপায়ে অর্জিত প্রায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ করেছেন স্ত্রীর নামে। স্ত্রীসহ সাবেক দুই কর্মকর্তা ফেঁসে গেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায়। 

সোমবার (৩ জুন) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান ও উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বাদী হয়ে এসব মামলা করেন। 

মামলার আসামিরা হলেন তারা বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক উপব্যবস্থাপক আব্দুল হাই ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান, আব্দুল হাই ভূঁইয়ার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগম ও মো. মনিরুজ্জামানের স্ত্রী নাজমা আক্তার।

একটি মামলায় ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৩ টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আঞ্জুমান আরা বেগম ও তার স্বামী বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাবেক উপব্যবস্থাপক আব্দুল হাই ভূঁইয়াকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আঞ্জুমান আরা বেগম গৃহিণী। স্বামী আব্দুল হাই ভূঁইয়ার অবৈধভাবে উপার্জিত ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৩ টাকা মূল্যের অবৈধ সম্পদ তাঁর নামে। স্বামীর সহায়তায় বিপুল এই সম্পদ নিজ নামে ভোগ দখলে রাখেন। সেই সঙ্গে দুদকে দাখিল করা বিবরণীতে সম্পদের মিথ্যা তথ্য দাখিল করেন।

উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের করা মামলায় বলা হয়, অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন ভোগ ও দখলে রাখার অভিযোগে দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আব্দুল হাই ভূঁইয়া বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের রাজস্ব বিভাগের উপব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত)। তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা বেগম একজন গৃহিণী হয়েও নিজ পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয়সহ তার মোট অর্জিত সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৯১ লাখ ৪১ হাজার ৯৩৩ টাকা।

তিনি দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর অংশে ৬ শতাংশ জমি এবং ওই জমিতে চারতলা নির্মাণাধীন একটি বাড়ির কথা উল্লেখ করেন। ৬ শতাংশ জমি তাঁর মায়ের কাছ থেকে হেবা সূত্রে প্রাপ্ত দলিল নং ৩৭১৮ / ১৯৯৯ মূলে অর্জন করেন। তবে সম্পদ বিবরণী ফরমে বাড়ি নির্মাণ ব্যয়ের কথা উল্লেখ করেননি।

অনুসন্ধানকালে নিরপেক্ষ প্রকৌশলী সমন্বয়ে গঠিত টিম বাড়িটি পরিমাপ করে চার তলা ভবনটির নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করেন ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮ টাকা। এ ছাড়া তিনি সম্পদ বিবরণীতে ৩ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। আঞ্জুমান আরা ১ কোটি ৭৭ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।

এ ছাড়া, ১ কোটি ৮ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৯ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পাউবোর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী নাজমা আক্তারের নামে পৃথক দুটি মামলা করেছে সংস্থাটি।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মো. মনিরুজ্জামানের স্ত্রী নাজমা আক্তার দৃশ্যত কোনো পেশার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও দুদক তাঁর নামে ৯৮ লাখ ৩ হাজার ৭৩৩ টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছ। এসব সম্পদ অর্জনের পক্ষে তিনি কোনো যুক্তি দেখাতে পারেননি। দুদকের ধারণা, বিপুল এই সম্পদ তিনি স্বামীর অবৈধ অর্জন থেকে করেছেন।

একইভাবে পাউবোর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামানের নামে ১০ লাখ ১১ হাজার ২০৬ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক। দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

Link copied!