আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “গত ১৫ বছরে গুম ও বিচারবহর্ভূত হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিলাম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। আদালত শুনানি নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকীসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।”
এদের মধ্য থেকে যাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব তাদের ১২ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান আগেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাকে ওইদিন আদালতে হাজির করা নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তাজুল ইসলাম আরও জানান, জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে গুমের অপরাধে ধরণ ভিন্ন হওয়ায় এই অভিযোগগুলো আলাদা করে শীর্ষ অভিযুক্ত ১২ জনের বিরুদ্ধে আজ গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করা হয়। প্রাথমিক শুনানি শেষে তাদের ১১ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন। প্রসিকিউশন জানান গুমের অপরাধ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অপরাধ। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বছরের পর পর বছর শত শত মানুষকে আয়না ঘরে আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। আর গুম করার জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বিদেশে পাঠানো, প্রমোশন দেওয়াসহ নানা প্রলোভন দেখানো হতো। এবার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিচার নিশ্চিত করে বাহিনীগুলোকে দায়মুক্ত করা হবে।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট ভারত পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তখন থেকে তিনি ভারতেই আছেন। বাংলাদেশ তাকে ফেরত চেয়ে আবেদন জানালেও এ বিষয়ে এখনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ভারত।
গত শনিবার (৪ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, “ওনাকে (শেখ হাসিনা) ফেরত পাঠানো নিয়ে ভারতের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো আমরা পাইনি।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেছে, ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের ফেরত আনবে সরকার।
নভেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছিলেন, পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্র পৃথিবীর যে দেশেই থাকুক, ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের ধরে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।