নীলফামারী জেলার সিনিয়র সহকারী জজ মো. নিয়াজ মাখদুম শিবলীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। যৌতুক চেয়ে মারধরের মামলায় এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালত এ পরোয়ানা জারি করেন।
তথ্যটি নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. তৌহিদুল ইসলাম সজীব জানান, যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় গত বছর মামলাটি দায়ের করলে প্রথমে আদালত আসামিকে হাজির হতে সমন জারি করেন। কিন্তু আসামি আদালতে হাজির না হওয়ায় আমরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করি। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মামলার বাদী রাজধানীর দারুস সালাম থানাধীন দক্ষিণ কল্যাণপুরের বাসিন্দা আবুল কালামের মেয়ে আফরিদা আইরিন আর্শী (৩০)।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পনের লাখ টাকা দেনমোহর ধার্যে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের সময় আসামির দাবি মতে ১২ লাখ টাকার আসবাবপত্র দেওয়া হয়। এ ছাড়া উপঢৌকন হিসেবে বিশ ভরির স্বর্ণালংকার দেওয়া হয়।
বিবাহের পর ধীরে ধীরে বাদিনী লক্ষ্য করেন, আসামি একজন বদমেজাজি, স্বেচ্ছাচারী, নারী নির্যাতনকারী, পরনারীতে আসক্ত, উশৃঙ্খল চালচলনে ও অনৈতিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত। ফলে বাদী সঙ্গত কারণে তাকে বাধা দেওয়ায় ও প্রতিবাদ করায় বিভিন্ন সময়ে আসামি তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। বাদী স্বামী-সংসার ও ভবিষ্যৎ সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে এবং আইন আদালতের আশ্রয় না নিয়ে সকল অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করে আসতে থাকেন এবং আসামিকে সুপথে ফিরিয়ে আনার জন্য একের পর এক উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু আসামির বেপরোয়া চলাচল ও নির্যাতন ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং প্রায়ই গভীর রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় এসে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন।
বাদী প্রতিবাদ করলে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন এবং তার অত্যাচার ও নির্যাতনের কারণে বাদীর গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়। অতঃপর আর্শীর কাছে আসামি বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পেশ করে চাপ সৃষ্টি করে। আর্শী ভবিষ্যৎ সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে পিতা-মাতার কাছ থেকে সাত লাখ টাকা এনে দেন।
সর্বশেষ গত বছরের ২৫ অক্টোবর রাতে বাদীর বাসায় আপসের জন্য আসেন নিয়াজ মাখদুম শিবলী এবং সংসার করার কথা বলে তার কাছে ৩০ লাখ টাকা, একটি প্রিমিও গাড়ি ও একটি ফ্ল্যাট যৌতুক দাবি করেন। না দিলে বাদীকে তালাক প্রদান করবেন বলে জানান।