একের পর এক ছিনতাই, ডাকাতির ঘটনার পর রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছেন সেনাবাহিনী। স্থায়ী সেনা ক্যাম্পের পাশাপাশি অপরাধ দমনে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে সেখানে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সেনাবাহিনীর বছিলা ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা মেজর নাজিম আহমদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মেজর নাজিম আহমদ জানান, তাদের শেরেবাংলা নগর ও বছিলায় দুইটি স্থায়ী ক্যাম্প রয়েছে। এসব ক্যাম্প থেকে এলাকার ট্রাফিক জটিলতার কারণে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়া বা টহল ডিউটি করা তাদের জন্য সমস্যা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ঢাকা উদ্যানে একটি অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এই ক্যাম্প ঢাকা উদ্যান ছাড়াও চাঁদ উদ্যান, চন্দ্রিমা উদ্যান, নবোদয় হাউজিং এলাকা কভার করবে। পরে প্রয়োজন হলে এই ক্যাম্প সরিয়ে নবোদয় হাউজিং, মোহাম্মদীয়া হাউজিং এলাকায়ও অস্থায়ীভাবে নেওয়া হবে।
এর আগে শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে ৪৫ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া রোববার জেনিভা ক্যাম্প থেকে ছয়জনকে আটক করে থানা হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে যেকোনো অপরাধের ভিডিও ক্লিপ বা তথ্য প্রমাণ দেওয়ার জন্য ক্যাম্পে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন মেজর নাজিম আহমদ।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আইনশৃঙ্খলা পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় ডাকাতি, চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা আকস্মিকভাবে বেড়ে গেছে।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা রাজধানীর মোহাম্মদপুরে। বেশ কিছু ছিনতাই, ধারাল অস্ত্রের আঘাত, মারামারি এবং ডাকাতির ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সেখানে। এলাকায় প্রায় প্রতিদিন একাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেলেও অনেক কিছুই থানা পর্যন্ত গড়ায় না।
মোহাম্মদপুরের বসিলায় একটি মিনি সুপারশপে অস্ত্রধারীদের ঢুকে ডাকাতি, মোহাম্মদপুর হাউজিং লিমিটেডে ‘নেসলে’ কোম্পানির একটি গাড়ি থামিয়ে ছুরি-চাপাতির মুখে নগদ ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ছিনতাই, সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ব্যবসায়ীর বাসায় ডাকাতি, শিয়া মসজিদ এলাকায় বাজার কমিটির দ্বন্দ্বে আপন দুই ভাইয়ের গুলিবিদ্ধ হওয়া, বেড়িবাঁধ সংলগ্ন গ্রিন ভিউ হাউজিংয়ের সড়কে যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাগুলো সামনে এলেও আরও অনেক ঘটনা রয়ে গেছে আড়ালে।
পাঠাও ডেলিভারি ম্যান সোহেল তানভীর গত ২৩ অক্টোবর রাতে ৮টার দিকে চানমিয়া হাউজিংয়ে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। চাপাতির ভয় দেখিয়ে কয়েকজন তার কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে যায়।
সোহেল তানভীর পুলিশকে বিষয়টি জানালেও মামলা করেননি। বাহিনীটি বলছে, এমন অনেকেই মামলা করছেন না।
এই অবস্থার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) মোহাম্মদপুরবাসীর পক্ষ থেকে কয়েকজন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে দেখা করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। দুদিন পর অর্ধশত বাসিন্দা থানায় গিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য ৭২ ঘটনা সময় বেঁধে দেন।