• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভাস্কর্য কারিগর থেকে অস্ত্র কারবারি, অতঃপর গ্রেপ্তার


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৪, ০২:১৮ পিএম
ভাস্কর্য কারিগর থেকে অস্ত্র কারবারি, অতঃপর গ্রেপ্তার

রাজধানীর বাড্ডা থেকে অস্ত্র কারবারি চক্রের মূল হোতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০-এর অভিযানিক গোয়েন্দা দল।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-১০-এর অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।  

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন অস্ত্র কারবারের মূল হোতা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর মধ্যপাড়া আব্দুল হাসেমের ছেলে মোখলেছুর রহমান সাগর (৪২), তার প্রধান সহযোগী পিরোজপুরের নেছারাবাদ জগন্ননাথকাঠি এলাকার এ কে এম ফজলুল হকের ছেলে তানভির আহম্মেদ (৩২), নেছারাবাদ দক্ষিণ কৌড়ি খাড়া এলাকার ইমাম মেহেদীর ছেলে অনিক হাসান (২৮), আবুল হোসেনের ছেলের আবু ইউসুফ সৈকত (২৮), মৃত মন্টু মিয়ার ছেলে রাজু হোসেন (৩৮) ও চান মিয়ার ছেলে আমির হোসেন (৪০)।

প্রেস বিফ্রিংয়ে র‌্যাবের কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বলেন, “গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব  জানতে পারে কিছু অস্ত্র কারবারি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র সরবরাহ করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ১১ মার্চ রাত আনুমানিক ১১টা ৫০ মিনিটে র‌্যাব-১০-এর অভিযান দল রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় মূলহোতা সাগর এবং তার প্রধান সহযোগী তানভিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যে অভিযানিক দলটি ১২ মার্চ রাত আনুমানিক রাত ২টা ৫০ মিনিটে বাড্ডার পূর্ব-পদররিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ওই চক্রের অপর ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, সাগর একজন ভাস্কর্য কারিগর। এই কাজে দক্ষতার গুণে সাগর ভারতের কলকাতা এবং শিলিগুড়িতে ১২ বছর কাজ করেছে। এ সময় সেখানে সুকুমার নামের এক অস্ত্র তৈরির কারিগরের সঙ্গে পরিচয় হয়। তার কাছে তিনি অস্ত্র তৈরির দক্ষতা অর্জন করেন। পরে তিনি দেশে এসে কোটিপতি হওয়ার নেশায় অস্ত্র তৈরি করে সরবরাহ করার পরিকল্পনা করে। তানভির, অনিক ও সৈকতকে সঙ্গে নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তোলে।

চক্রটির সদস্যদের পেশা সম্পর্কে র‌্যাবের কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বলেন, তানভির পেশায় একজন লেজার সিএনসি ডিজাইনার। সে যেকোনো কিছু কম্পিউটারে 2D নকশার কাটিং করতে পারত। এই কাজের দক্ষতায় তানভির, সাগরের দেওয়া নকশা অনুযায়ী বিভিন্ন অস্ত্রের যন্ত্রাংশ তৈরির প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করত। পরে সাগর ও তানভির অস্ত্র তৈরি করে সেগুলো অনিক ও সৈকতের কাছে হস্তান্তর করত। আর আমির ও রাজু ছিল অস্ত্রের অন্যতম ক্রেতা। তারা বিভিন্ন সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারি ও বিভিন্ন নাশকতাকারীদের কাছে অধিক মূল্যে অস্ত্রগুলো বিক্রি করত।

প্রেস বিফ্রিংয়ে জানানো হয়, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে ৪টি পিস্তল, ৪ রাউন্ড কার্তুজ পিস ৭টি পিস্তলের কাঠের ফর্মা, ১০টি ফায়ারিং ম্যাকানিজম, ৪টি ট্রিগার, ২টি পিস্তলের হ্যান্ডগ্রিপ, ২টি ড্রিল বিট, ৫টি রেত, ৫০টি স্প্রিং, ৪০টি পিস্তলের নাট-বল্টু, ২টি কম্পাস, ৩টি গাজ, ৪টি ক্লাম, ২টি ড্রিল মেশিন, ২টি বাইস, ১টি বার্ণি স্কেল, ১টি মুগুর, ২০টি হেস্কো ফ্রেম, ২টি গোল্ড এলএস ফ্লাম, ১টি টুল বক্স, ১টি গ্যারেন্ডার মেশিন, ১টি কাঠের যোগান, ১টি হাতুরি এবং ৪টি শিরিস কাগজ উদ্ধার করা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে আইনাগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে র‌্যাবের  এ কর্মকর্তা জানান।  

Link copied!