আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলার আসামি দুবাইয়ে পালিয়ে থাকা রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে ইন্টারপোল ওয়েবসাইটের রেড নোটিশের তালিকায় আরাভ খানের নাম পাওয়া গেছে।
রবিউল ইসলামের নাম যুক্ত হওয়ার প্রেক্ষিতে ইন্টারপোলের তালিকায় ৬৩ জন বাংলাদেশি অপরাধী সংস্থাটির রেড নোটিশের আওতায় রয়েছেন। যারা বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার যুবক রবিউল ইসলাম নিজের নাম, জাতীয়তা পরিবর্তন করে জোগাড় করেন ভারতীয় পাসপোর্ট। এ পাসপোর্টেই পাড়ি জমান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। দুবাইয়ে ‘আরাভ জুয়েলার্স’ নামের ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের নাম আরাভ খান। মূলত তিনি বাংলাদেশের নাগরিক রবিউল ইসলাম। তবে ভারতে গিয়ে নাম পরিবর্তন করে রাখেন আরাভ খান।
এর আগে, ২০১৮ সালে বনানীতে বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ইন্টারপোলে পাঠায় বাংলাদেশ পুলিশের শাখা। পরবর্তীতে এ বিষয়টি ইন্টারপোল অবহিত হলে রেড নোটিশ জারি করে। তারই ধারাবাহিকতায় ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে যুক্ত হয় রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভের নাম।
আরাভ খানের এলাকাবাসী ও প্রতিবেশী সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র জুয়ার টাকা যোগানোর জন্য রবিউল ইসলাম আপন এলাকায় নানা অপকর্ম করতেন। গ্রামের মানুষের হাস-মুরগি ও নিজের বাবার ধরে আনা মাছ চুরি করে বিক্রি করে দিতেন বাজারে। সেই টাকা দিয়ে খেলতেন জুয়া। একসময় অতিষ্ঠ হয়ে আপনকে গ্রাম ছাড়াতে বাধ্য করেছিলেন গ্রামবাসী। পরে ঢাকায় গিয়ে ধনীর ছেলেদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে চুরি করতেন তাদের বাইক।
১৯৯৩ সালে কোটালীপাড়ার হিরণ ইউনিয়নের আশুতিয়া গ্রামে জন্ম হয় রবিউল ইসলাম আপনের। তার বাবার নাম মতিউর মোল্লা। তার বাবা খুলনায় ভাঙারি মালামাল ফেরি করতেন। জীবিকার তাগিদে একদিন কোটালীপাড়া চলে আসেন। বিলের মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। পরে সেখানে জমি কিনে বাড়ি করেন। অভাব অনটনের সংসার হওয়ায় রবিউল ইসলাম আপনকে পাঠিয়ে দেন আদি বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারীতে। সেখানে এস এম মডেল স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ফেল করার পর আপনকে কোটালীপাড়ায় নিয়ে আসেন তার পরিবার। সহযোগিতা করেন বাবার সঙ্গে বিলে মাছ ধরার কাজে।
একসময় আপন জুয়া খেলাসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। বিল থেকে বাবার ধরে আনা মাছ চুরি করে বাজারে বিক্রি করে দিতেন। তার হাত থেকে রক্ষা পেত না এলাকাবাসীর হাস মুরগিও। এ নিয়ে এলাকায় কয়েকবার শালিস বিচার বসে। একসময় অতিষ্ঠ হয়ে বাবা মতিউর মোল্লাকে চাপ দিয়ে আপনকে গ্রাম ছাড়াতে বাধ্য করেছিলেন গ্রামবাসী।