রাজধানীর বনশ্রীতে গুলিবিদ্ধ স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার হোসেন দাবি করেছেন, বাড়ির দারোয়ানের স্ত্রী সময়মতো গেট খুলে দেননি বলেই তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে স্বর্ণ নিয়ে পালাতে পেরেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে শুয়ে একটি গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে রোববার রাত ১০টার দিকে নিজের বাসা বনশ্রীর ৭ নম্বর রোডের ডি ব্লকের ২০ নম্বর বাড়ির সামনে মো. আনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে ও গুলি করে ১৪০ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ১ লাখ টাকা নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার বলেন, ‘দারোয়ানের স্ত্রী যদি গেট খুলে দিতেন, তাহলে আজকে আমার এই গুলির ঘটনা হতো না।’
ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুলিবিদ্ধ স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার বলেন, (রোববার) রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় ফেরার পথে আমার বন্ধুর দোকানে দাঁড়াই। সেখানে ৫ মিনিট তার সঙ্গে কথা বলে বাসার উদ্দেশে মোটরসাইকেল চালিয়ে রওনা করি। আমার বাসার সামনে গিয়ে মোটরসাইকেলটি দাঁড় করাই। আমি দারোয়ানকে গেট খুলতে বলি। এর মধ্যে তিনটা মোটরসাইকেল এসে আমাকে ঘেরাও করে ফেলে। এই দেখে দারোয়ানের স্ত্রী গেট লাগিয়ে দেয়। তখনো দুর্বৃত্তরা আমাকে গুলি বা কুপিয়ে আহত করেনি। আমি দারোয়ানকে বারবার গেট খুলতে বলি, কিন্তু তিনি গেট খোলেননি।’
আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ‘আপনারা তো ভিডিওতে দেখছেন, এই সময়ে তারা (দুর্বৃত্ত) আমার ব্যাগ নিয়ে টানাটানি করছিল। পরে আমাকে কুপিয়ে ও গুলি করে আমার ব্যাগে থাকা ১৪০ ভরির মতো স্বর্ণ ও নগদ এক লাখ টাকা নিয়ে যায়। দারোয়ানের স্ত্রী যদি পকেট গেট খুলে দিত তাহলে আমি কিন্তু বাসার ভেতরে ঢুকে যেতে পারতাম। তাহলে তারা আমার ব্যাগ এবং নগদ টাকা কিছুই নিতে পারত না। দুর্বৃত্তরা আমাকে গুলি ও কুপিয়ে জখম করতে পারে না।’
আহত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘ব্যাগ দিতে না চাওয়াই তারা আমাকে কুপিয়ে জখম ও ৩টি গুলি করে। আমার দুই পায়ে দুটি গুলি ও অন্ডকোষে একটি গুলি লাগে। তবে এখন পর্যন্ত চিকিৎসক জানিয়েছে আমার শরীরে কোনো গুলি নেই এবং অন্ডকোষের একটি অস্ত্রোপচার হবে। শরীরের যে কয়েকটি ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, সেগুলো অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।’
স্বর্ণ ব্যবসায়ী আনোয়ার আরও বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ আগে ডিবি পরিচয় দিয়ে আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হতো। আমাকে বলা হতো, আমি অবৈধ স্বর্ণ কিনি, আমার নামে মামলা আছে। এসব কথা বলে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা আমার কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা নেয়। পরে তাদের আরও ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তখন আমি তাদের কল করি যে, ভাই সরাসরি এসে ১০ হাজার টাকা নিয়ে যান। তখন ওই ব্যক্তি জানায় ঢাকার বাইরে আছে, এসে দেখা করবে। এরপর আমি আবার কল করলে অপর প্রান্ত থেকে বলে তার সিমটি হারিয়ে গিয়েছিল। ওই লোকটি প্রতারক ছিল বলে অপরপ্রান্ত থেকে ওই ব্যক্তি আমাকে জানায়। আমাকে তিনটি নম্বর থেকে কল দিয়েছিল, সে নম্বরগুলো হলো- ০১৯৪১৮৯৫৫২০, ০১৭০৭২২৯০৯৫, ০১৮৪৬৭৪০৭৪৭।’