রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক শাহাবুদ্দিনকে (৩৫) হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
সিএমএম আদালতে এই মামলার আবেদন করেন শাহাবুদ্দিনের বাবা আবুল কালাম।
এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী লিটন মিয়া।
মামলার অপর আসামিরা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলার আরজির তথ্য বলছে, গত ৫ আগস্ট শেরেবাংলা নগর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শাহাবুদ্দিন।
শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার একটি মামলা হয় মোহাম্মদপুর এলাকার মুদিদোকানি আবু সায়েদ নিহত হওয়ার ঘটনায়।
এছাড়া মোহাম্মদপুরের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন ইমন (১২) হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এ নিয়ে তিনদিনে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চারটি মামলা হলো।
গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসেন ইমন (১২) নিহত হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলার আবেদন করেন তেজগাঁওয়ের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ ভূঁইয়া।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগকারীর বক্তব্য রেকর্ড করেন ম্যাজিস্ট্রেট এবং মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন (এফআইআর) হিসেবে অভিযোগটি নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আনিসুল হক, তাজুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, হাছান মাহমুদ ও সালমান এফ রহমান, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, র্যাবের সাবেক ডিজি হারুন অর রশিদ, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি খ মহিদ উদ্দিন, সাবেক ডিবি (ডিএমপি) প্রধান হারুন অর রশিদ এবং ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলায় অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজন র্যাব সদস্যকেও আসামি করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি দেশ ছাড়েন। এখন তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।