আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। প্রান্তিক পোলট্রি খামারিরা তাদের স্বার্থ রক্ষা ও করপোরেট কোম্পানির সিন্ডিকেট প্রতিহত করার জন্য ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। এই দাবিগুলি পূরণ না হলে ১ জানুয়ারি থেকে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বন্ধ করার কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দিয়েছে প্রান্তিক পোলট্রি খামারিদের এই সংগঠন।
বিজ্ঞপ্তিতে বিপিএ সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেছেন, প্রান্তিক পোলট্রি খাতের সমস্যা ও সংকটের সমাধানের জন্য বারংবার আহ্বান জানানো সত্ত্বেও সরকার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং করপোরেট সিন্ডিকেটকে সহায়তা করা হচ্ছে। এর ফলে পোলট্রি খাতে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে।
প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বলছে, করপোরেট কোম্পানিগুলো মুরগির খাদ্য ও বাচ্চার দাম অযৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করে রেখেছে। এর ফলে প্রান্তিক খামারিদের মুরগি এবং ডিম উৎপাদনের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। অন্যদিকে পোলট্রি খাতের বড় কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদিত ডিম ও মুরগির দামও ইচ্ছে মতো স্থির করে। এ কারণে ছোট খামারিরা তাদের উৎপাদন খরচের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে পণ্যের দাম নির্ধারণ করতে পারে না এবং লোকসানের সম্মুখীন হন। এজন্য প্রান্তিক খামারিদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে মুরগির খাদ্য ও বাচ্চা বিতরণের নিশ্চয়তা দাবি করছে বিপিএ। পাশাপাশি প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের সঠিক মূল্যের নিশ্চয়তা দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিপিএর অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ক্ষুদ্র কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ এবং ভর্তুকি প্রদান; ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনরুদ্ধারে বিশেষ প্রণোদনা প্রদান; ছোট কৃষকদের জন্য আলাদা বাজার সুবিধা তৈরির ব্যবস্থা করা; নীতিমালার মাধ্যমে কর্পোরেট সিন্ডিকেটকে নিয়ন্ত্রণ করা; চুক্তিভিত্তিক চাষাবাদ বন্ধ করা এবং প্রান্তিক কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
বিপিএ সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার জানিয়েছেন, এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের পোলট্রি শিল্পে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। এতে প্রান্তিক খামারিরা টিকে থাকবে। কিন্তু সরকার যদি দ্রুত কার্যকর কিছু না করে, তাহলে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে দেশের সব জেলা-উপজেলায় প্রান্তিক খামার বন্ধ করতে হবে।