দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা সরকারি কর্মচারীদের


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম
দাবি আদায়ে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা সরকারি কর্মচারীদের
মহাসমাবেশ। ছবি : সংগৃহীত

নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন ও ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতাসহ ৭ দাবিতে টানা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীরা। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে ১ মার্চ থেকে সারা দেশে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ মহাসমাবেশ করা হয়।

ঘোষিত কর্মসূচিগুলো হলো
আগামী ১৬-২২ ফেব্রুয়ারি সপ্তাহব্যাপী সারা দেশে সরকারি অফিসসমূহে দাবি সংবলিত ব্যানার সাঁটানো, লিফলেট বিতরণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমে যোগাযোগের মাধ্যমে দাবির স্বপক্ষে জনমত গঠন।

আগামী ২৩-২৮ ফেব্রুয়ারি সব অফিস প্রধান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা প্রশাসক (ডিসি), বিভাগীয় কমিশনার ও সচিবালয়ে কর্মসূচির বিষয়ে অবহিত করে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

এসব কর্মসূচির পরও দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১ মার্চ স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত থেকে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেওয়া হবে।

সমাবেশে সরকারি কর্মচারীরা বলেন, “প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা নিরলস মানুষের সেবা দিয়ে আসছে। তারা যৌক্তিক দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। অবিলম্বে ৭ দফা দাবি মেনে নিতে হবে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের দাবি-দাওয়া মেনে না নেওয়া হলে সারাদেশের সব সরকারি অফিসে ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।”

মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ১১-২০তম গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের সমন্বয়ক মো. মাহমুদুল হাসান। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ১৭-২০ গ্রেড সরকারি কর্মচারী সমিতির সমন্বয়ক মো. রফিকুল আলম।

কর্মচারীদের ৭ দফা দাবিগুলো হলো
১. বৈষম্যমুক্ত নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পে-কমিশন গঠন ও পে-স্কেল ব্যক্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত অন্তর্বর্তী কালের জন্য ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা (১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য) জানুয়ারি ২০২৫ থেকে কার্যকর করতে হবে।

২. যেসব কর্মচারী মূল বেতনের শেষ ধাপে উন্নীত হয়েছেন, তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি নিয়মিত করতে হবে। বেতন স্কেলের বৈষম্য নিরসনের জন্য ১০ ধাপে বেতন স্কেলে নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।

৩. সচিবালয়ের মতো সব সরকারি, আধাসরকারি দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সমপদগুলোর পদবি ও গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে। এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন করে কর্মচারীদের মধ্যে সৃষ্ট বৈষম্য দূর করতে হবে।

৪. ২০১৫ সালে পে-স্কেলের গেজেটে প্রত্যাহার করা তিনটি টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল ও সব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে গ্র্যাচুইটির পাশাপাশি পেনশন প্রবর্তনসহ বিদ্যমান গ্র্যাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের স্থলে শতভাগ নির্ধারণ ও পেনশন গ্র্যাচুইটি এক টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

৫. বাজারমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং মুল্যস্ফীতি বৃদ্ধির বিষয় বিবেচনা করে প্রদেয় সব ভাতাদি পুনর্নির্ধারণ, ১১-২০ গ্রেডের রেশন ব্যবস্থার প্রবর্তন ও সরকার প্রদত্ত গৃহ ঋণ সুবিধা সহজ করতে হবে।

৬. ব্লক পোস্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সব পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা পাঁচ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। এছাড়া টেকনিক্যাল কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দিতে হবে।

৭. উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্বখাতে স্থানান্তরিত পদের পদধারীদের প্রকল্পের চাকরিকাল গণনা করে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদান করার অবকাশ নেই মর্মে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত বৈষম্যমূলক আদেশ ও আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করতে হবে।

Link copied!