এবার জাতীয় পার্টিকে উৎখাতের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। জাতীয় পার্টি কয়েকজনকে পিটিয়েছে এবং অস্ত্রসহ মহড়া দিচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে এ ঘোষণা দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে এ নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেন হাসনাত।
ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, “জাতীয় বেইমান এই জাতীয় পার্টি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিজয়নগরে আমাদের ভাইদের পিটিয়েছে, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে।”
এর কিছুক্ষণ পর আরও একটি পোস্ট দেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। সেখানে তিনি লিখেছেন, “রাজু ভাস্কর্য থেকে ৭.৩০ এ মিছিল নিয়ে আমরা বিজয়নগরে মুভ করব। জাতীয় বেইমানদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে।”
এর আগে সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে এক সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান। ওই সভায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের প্রধান অতিথি ছিলেন।
সভায় মোস্তাফিজার রহমান বলেন, “সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহর কোনো প্রোগ্রাম রংপুরের মাটিতে হতে দেওয়া হবে না।” এ সময় দলের নেতাকর্মীরাও স্লোগান দিয়ে তাকে সমর্থন জানান।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মোস্তাফিজার রহমান বলেন, “জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক সংলাপে না ডাকতে ফেসবুকে হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম যে ঘোষণা দিয়েছেন। এ জন্য তারা রংপুরে আসতে পারবেন না। যার যা কিছু আছে, তা–ই নিয়ে এই রংপুরের পার্টি অফিসে বসে থাকবেন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু। যদি এই আন্দোলনকে আমরা জনস্রোত করতে না পারি, তাহলে জাতীয় পার্টি থেকে নাকে খত দিয়ে চলে যাবে।”
জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী সারজিস ও হাসনাতের দ্বন্দ্বের শুরু হয় দলটিকে সংলাপে ডাকা নিয়ে ফেসবুকে দেওয়া প্রতিক্রিয়া নিয়ে।
গত ৭ অক্টোবর রাতে নিজের ফেসবুক পেইজে জাতীয় পার্টিকে ‘ফ্যাসিস্টদের দালাল’ হিসেবে উল্লেখ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি পোস্টে লেখেন, “গিরগিটির মতো রং পাল্টানো নামসর্বস্ব দল জাতীয় পার্টি বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারকে বৈধতা দিয়ে এসেছে।”
জাতীয় পার্টিকে সংলাপের ডাকার বিরোধিতা করে সারজিস আরও লেখেন, “জাতীয় পার্টির মতো মেরুদন্ডহীন ফ্যাসিস্টের দালালদেরকে প্রধান উপদেষ্টা কীভাবে আলোচনায় ডাকে?”
অন্যদিকে, একইদিনে একই সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ নিজের ফেসবুক পেইজে এক পোস্টে জাতীয় পার্টিকে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে উল্লেখ করে লেখেন, “স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হলে, আমরা সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও কঠোর বিরোধিতা করব।’