• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

অরাজকতাকারী ব্যর্থ হবে, সবাই ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ উপভোগ করবেন


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৪, ০৩:১৮ এএম
অরাজকতাকারী ব্যর্থ হবে, সবাই ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ উপভোগ করবেন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন,  “অরাজকতার বিষবাষ্প এখন যে-ই ছড়াবে, বিজয়ী ছাত্র-জনতাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পূর্ণ শক্তি তাকে ব্যর্থ করে দেবে।”

বৃহস্পতিবার ( ৮ আগস্ট) রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ ঘোষণা দেন। খবর বাসসের।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন উৎসবের মুহূর্তে এ স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে একটি অরাজকতা ও ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। অরাজকতা আমাদের শত্রু। একে দ্রুত পরাজিত করতে হবে।”

ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘এ মুহূর্তে সরকারের প্রথম কর্তব্য হিসেবে আমরা এই যড়যন্ত্রকারীদের কঠিন হাতে দমন করব। স্বাধীনতার মুক্ত বাতাস যেন প্রত্যেকে বুক ভরে নিতে পারে, এই নিশ্চয়তা দানই আমাদের সরকারের প্রথম প্রতিশ্রুতি। এই ব্যাপারে দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি।

দ্বিতীয়ত কর্তব্যের কথা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “স্বাধীনতার এই মিলনমেলা থেকে বাদ যাবে না আমাদের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও। সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), পুলিশ, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা, কোস্টগার্ড—কেউ বাদ যাবে না। অন্য সবার মতো তাদের প্রত্যেক সদস্য আজ ওপরওয়ালার আইনবহির্ভূত জবরদস্তিমূলক হুকুম থেকে মুক্ত। কারও জন্য এটা বিন্দুমাত্র ব্যাহত হলে আমাদের আজকের উৎসব ম্লান হয়ে যাবে।”

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ তার ভাষণে বলেন, “প্রচণ্ড নিষ্ঠুর পতিত স্বৈরাচারী সরকার এসব প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল। আমরা তার এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে প্রতিষ্ঠানগুলোর হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনব। এই ঘৃণ্য চেষ্টায় ব্যবহৃত হয়ে যারা অপরাধ সংঘটিত করেছে, তাদের আইনানুগ বিচারের মাধ্যমে শিগগির উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। একই কথা দেশের সকল মন্ত্রণালয়, সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও নানা কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রযোজ্য। সব অপরাধীর বিচার করা হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “আজ দ্বিতীয়বার যারা স্বাধীনতার স্বাদ আমাদের সবার জন্য সম্ভব করল, সেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ ছাত্র-জনতাকে এবং এতে আহত অসংখ্য আন্দোলনকারীকে স্মরণের মাধ্যমেই দেশবাসীর পক্ষ থেকে তাদের সম্মান জানাচ্ছি। তাদের দুঃসাহসিক আত্মত্যাগ, সাহস ও সারা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা ছাড়া এ স্বাধীনতা অর্জন কখনোই সম্ভব হতো না।”

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আজ প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও তার সদস্যরা নিজ নিজ কর্তব্য পালন করার মাধ্যমে দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে উপভোগ করবেন। দেশকে গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যাবেন এবং দেশ ও জগৎবাসীকে উপভোগ করার সুযোগ করে দেবেন। আমি জাতির পক্ষ থেকে প্রত্যেককে নির্ভয়ে ও আনন্দচিত্তে নিজ নিজ কর্মস্থলে নিজ নিজ সামর্থ্য নিয়ে এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।”

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, “আমাদের এই লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করুন। সারা বিশ্ব আজ অবাক হয়ে বলছে, সাবাস বাংলাদেশ, সাবাস বাংলাদেশের ছাত্র–জনতা। আমরা এই অর্জনকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে চাই। আমাদের ছাত্র–জনতার জন্য কিছুই অসম্ভব নয় যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি, ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকি। সবার জন্য মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারি।”

Link copied!