চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) মূল বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ দুই লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা থেকে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুই লাখ ২৭ হাজার ৫৬৬ কোটি ৯ লাখ টাকার সংশোধিত এডিপি অনুমোদন হয়েছে। এরমধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে অর্থায়ন ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৬ কোটি ৯ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়ন হবে ৭৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
বুধবার (১ মার্চ) শেরেবাংলা নগরে এনইসির সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
ড. শামসুল আলম বলেন, “সংশোধিত এডিপিতে দুই লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে নিজস্ব অর্থায়ন কমছে না। এডিপিতে নিজস্ব অর্থায়নের এক লাখ ৫৩ হাজার ৬৬ কোটি টাকা অপরিবর্তিত থাকছে। তবে বিদেশি সহায়তা থেকে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা কম বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। তাতে সংশোধিত এডিপিতে বিদেশি সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াবে সাড়ে ৭৪ হাজার কোটি টাকায়। বর্তমানে এডিপিতে এক হাজার ৩৬৩টি প্রকল্প আছে।”
পরিকল্পনা কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী, সংশোধিত এডিপিতে পরিবহন ও যোগাযোগ সেক্টরে প্রায় ৬১ হাজার ৮১০ কোটি টাকা (২৭ দশমিক ১৬ শতাংশ), বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সেক্টরে প্রায় ৩৮ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা (১৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ), গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধাবলি সেক্টরে প্রায় ২৫ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা (১১ দশমিক ৪০ শতাংশ), স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সেক্টরে প্রায় ২০ হাজার ২৩১ কোটি (৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ), শিক্ষা সেক্টরে প্রায় ১৮ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা (৮ দশমিক ১০ শতাংশ), স্বাস্থ্য সেক্টরে প্রায় ১২ হাজার ৭৪৫ কোটি (৫ দশমিক ৬০ শতাংশ)। পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ: প্রায় ১২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা (৫ দশমিক ৫ শতাংশ), কৃষি সেক্টরে প্রায় ৯ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা (৪ দশমিক ১৩ শতাংশ), শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা: প্রায় ৪ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা (২ দশমিক ০৬ শতাংশ), ধর্ম, সংস্কৃতি ও বিনোদন সেক্টরে প্রায় ৪ হাজার ২৭১ কোটি টাকা (১ দশমিক ৮৮ শতাংশ) বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দের ১০টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ হচ্ছে—স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রায় ৩৯ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা (১৭ দশমিক ৬৮ শতাংশ), সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে প্রায় ২৯ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা (১৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ), বিদ্যুৎ বিভাগে প্রায় ২৫ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা (১১ দশমিক ২৮ শতাংশ), রেলপথ মন্ত্রণালয়ে প্রায় ১২ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা (৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে প্রায় ১২ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা (৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ), পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রায় ১১ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা (৫ দশমিক ০৭ শতাংশ), স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে প্রায় ৯ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা (৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রায় ৭ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা (৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে প্রায় ৭ হাজার ২১৮ কোটি টাকা (৩ দশমিক ২৩ শতাংশ) এবং সেতু বিভাগে প্রায় ৭ হাজার ৬৭ কোটি টাকা (৩ দশমিক ১৬ শতাংশ)।