পরিবার নিয়ে দিয়াবাড়ী ঘুরতে এসেছেন মো. শাহীন আলম। পারিবারিক ঝামেলা থাকার কারণে বাড়ি যেতে পারেননি তিনি। তাই পরিবার নিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে এখানে এসেছেন।
সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে আলাপকালে শাহীন আলম বলেন, “মা-বাবা ছাড়া ঢাকায় ঈদ করা সত্যিই কষ্টকর। তবে পারিবারিক কিছু বিষয়াদির কারণে বাড়ি যেতে পারেনি। তাই বউ-বাচ্চা নিয়ে বিনোদনকেন্দ্রে ঘুরতে এসেছি। এসে খুব ভালো লাগছে।”
শাহীন আলম আরও বলেন, “দিয়াবাড়ীর সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জোর দেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের ভিড় এবং সবুজ প্রকৃতি পরিবেশ সবাইকে মুগ্ধ করছে।”
শুধু শাহীন আলম একাই নন, তারমতো অনেকেই এখানে ঘুরতে এসেছেন। তাদেরই একজন কুলসুম।
কুলসুম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “দিয়াবাড়ী চমৎকার জায়গা। এখানে দিন দিন দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। এখানে এলে আমাদেরও ভালো লাগে। তবে বাড়ি যেতে পারলে, ভালো লাগত।”
পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে রাজধানী ছেড়েছেন প্রায় দেড় কোটি মানুষ। তবে যারা ঢাকায় আছেন, তারা ঈদের ছুটিতে ছুটছেন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবার কিংবা প্রিয়জন নিয়ে গল্প, আনন্দ, আড্ডায় মেতেছেন তারা।
সরেজমিনে দিয়াবাড়ী, হাতিরঝিল, শ্যামলী শিশু পার্ক, রমনা পার্কসহ বেশ কয়েকটি বিনোদনকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে নতুন সাজে সেজেছে বিনোদন কেন্দ্রগুলো। খাবার ব্যবস্থা থেকে শুরু করে শিশুদের খেলনায় নতুনত্ব আনা হয়েছে। তবে তীব্র রোদে তাপমাত্রা বাড়লেও ঈদের আনন্দে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারেনি দর্শনার্থীদের।
তাদের ভাষ্য, পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে না পারলেও নগরবাসীর একত্রে অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ফলে নগরবাসী একে-অপরের অপরিচিত মনে হলেও আনন্দ উপভোগ, গল্প, আড্ডা, খুনসুটিতে আপন করে নিয়েছেন।
বাড্ডা থেকে হাতিরঝিলে আসা আমেনা বেগম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমরা যারা ঢাকায় আছি, সবাই একে-অপরের পরিচিত। তবে সেটা আজকের জন্য। একে-অপরকে আপন মনে করে নিয়েই ঈদের আনন্দ উপভোগ করছি।”
গুলশান থেকে আসা ইদ্রিস সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আজকে গরম থাকলেও সঙ্গে হালকা বাতাস বইছে। হাতিরঝিলের সবুজ প্রকৃতিতে আমরা মুগ্ধ। পরিবেশটা আমাদের সবকিছু ভুলিয়ে দিয়েছে। অন্যসব স্বাভাবিক দিনের চেয়ে আজকে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখে খুব ভালো লাগছে।”
এদিকে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, “সব ধরনের অপরাধ থেকে দর্শনার্থীদের সুরক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থেকে শুরু করে নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীও মোতায়েন করা হয়েছে। যেন কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাতিরঝিল নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্য সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “সকাল থেকে সারা রাত নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে আমরা সর্বদাই প্রস্তুত রয়েছি। সেভাবেই আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”