স্মার্টফোনেই মিলছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীর তথ্য, ভোটার কেন্দ্রসহ ভোটের সমস্ত তথ্য। এ সংক্রান্ত একটি অ্যাপ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর উন্মুক্ত করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। এটির নাম ‘স্মার্ট ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ’।
এই অ্যাপ ব্যবহার করে একজন ভোটারের ভোটার নম্বর, ভোটিং নম্বর, ভোট কেন্দ্রের ঠিকানাসহ গুগল ম্যাপের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রের ভৌগোলিক অবস্থান জানা যাবে। শুধু তাই নয়, এই একটি অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারী গোটা দেশের প্রার্থীদের বিস্তারিত তথ্য যেমন: প্রার্থীর হলফনামা, আয়কর রিটার্ন, নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণীর পাশাপাশি মোট ভোটার ও আসন সংখ্যা জানতে পারবেন।
স্মার্ট ফোনের গুগল প্লে-স্টোরের সার্চ অপশনে গিয়ে লিখত হবে ‘Smart election Management BD’। এরপর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রতীক সম্বলিত একটি অ্যাপ পাওয়া গেলে তা ইনস্টল করে অ্যাপটি আপনার সংগ্রহে চলে আসবে। আইফোন ব্যবহারকারীরা এই অ্যাপটি অ্যাপ স্টোরে পাবেন।
অ্যাপে প্রবেশ করবেন যেভাবে
অ্যাপটি ইনস্টলের পর একজন ভোটারকে তার ভাষা নির্বাচন করতে বলা হবে। অ্যাপটিতে ইংরেজি এবং বাংলা দুই ভাষা রয়েছে। এরমধ্যে একটি নির্বাচন করলে অ্যাপ নিয়ে আপনাকে মূল মেনুতে প্রবেশ করাবে।
অ্যাপের মাধ্যমে একজন ভোটার যেভাবে নিজের তথ্য নেবেন
অ্যাপে প্রবেশ করার পর হোম মেনুতে দেখা মিলবে “আপনার ভোট সংক্রান্ত বিস্তারিত চাইলে এনআইডি ভেরিফাই করুন” লেখা। এর ঠিক নিচে রয়েছে রয়েছে জন্ম তারিখ এবং এনআইডি নম্বরের স্থান। নির্ধারিত স্থানে এনআইডিতে থাকা জন্ম তারিখ এবং নম্বর প্রদান করে “যাচাই করুন” অপশনে ক্লিক করলে একজন ভোটার তার যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন।
নির্বাচন সম্পর্কিত তথ্য পাওয়ার উপায়
অ্যাপের হোম মেনুর পাশে রয়েছে তথ্য মেনু। এই মেনুতে ক্লিক করলে পাওয়া যাবে “আপনার নির্বাচন” নামের একটি অপশন। এখানে রয়েছে একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তথ্য।
“আপনার নির্বাচন” অপশনে থেকে একটি নির্বাচন নিশ্চিত করে ওই নির্বাচনের তথ্য যাচাই করতে হবে। নির্বাচন নিশ্চিত করে এর নিচেই রয়েছে ওই নির্বাচনের যাবতীয় তথ্য। যেমন, আসন সমূহ, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের হলফনামা, আয়কর রিটার্ন, নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণীর ইত্যাদি।
হলফনামা, আয়কর রিটার্ন, নির্বাচনী ব্যয় ও ব্যক্তিগত সম্পদের বিবরণীর পাওয়া যাবে যেভাবে
আপনার নির্বাচন নিশ্চিতের নিচে রয়েছে “আসন সমূহের তথ্য”। এখানে প্রথমে বিভাগ নির্বাচন এবং পরে জেলা নির্বাচন করলে চলে আসবে জেলার আসন সংখ্যা সমূহের তালিকা। এরপর আসনের পাশেই থাকা “বিস্তারিত” লেখায় ক্লিক করলে ওই আসনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সকল প্রার্থীদের নাম এবং প্রতীক পাওয়া যাবে। এরপর আবারও “বিস্তারিত” অপশনে ক্লিক করে প্রার্থীর বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে।
তথ্য মেনুতে আরও যা রয়েছে
তথ্য মেনুর “এক নজরে” অপশনে ক্লিক করে পাওয়া যাবে দেশের মোট আসন, নিবন্ধিত ভোটার সংখ্যাসহ বিভিন্ন তথ্য। পাশাপাশি দেশে যে সকল রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন রয়েছে তার তথ্যও পাওয়া যাবে “এক নজরে” অপশনটিতে। রয়েছে নির্বাচন কমিশনের নোটিশ বোর্ড।
অ্যাপে আরও যা রয়েছে
তথ্য মেনুর পাশে ফলাফল ও বিশ্লেষণ নামের দুটো মেনু রয়েছে। এর মধ্যে ফলাফল মেনুতে “আপনার আসন এবং সকল আসন” নামের দুটো অপশন রয়েছে। তবে আপনার আসনে তথ্য পাওয়া যাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর। আর সকল আসনে শুধু পাওয়া যাবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের তথ্য।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের তথ্য পেতে প্রথমে বিভাগ এবং পরে জেলা নির্বাচন করে তার তথ্য দেখতে হবে। আর বিশ্লেষণ মেনু প্রস্তুতের কাজ এখনো চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাপ সংশ্লিষ্টরা।
জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর থাকলেই যেকোনো ব্যক্তি এই অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন। যার মাধ্যমে তিনি নির্বাচন সংক্রান্ত সকল তথ্য নিমেশেই পেয়ে যাবেন। কিন্তু যথাযথ প্রচারের অভাবে অ্যাপটি সম্পর্কে অনেকে সাধারণ মানুষই জানেন না।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, অ্যাপটি সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার চালানো প্রয়োজন। যাতে সাধারণ মানুষ এর সম্পর্কে জানতে পারেন।