‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ স্লোগানকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
বুধবার (৫ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। টানা চতুর্থ মেয়াদে গঠিত বর্তমান সরকারের এটি প্রথম বাজেট এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের ২১তম বাজেট। পাশাপাশি, বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর এটি প্রথম বাজেট।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে যাচ্ছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ নতুন অর্থবছরে সরকার ব্যয় বাড়াতে চায় আগের অর্থবছরের (২০২৩-২৪) চেয়ে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী নতুন বাজেটের বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানান, নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখাই হবে আগামী বাজেটের মূল লক্ষ্য। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রাও থাকছে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের আদায়ের লক্ষ্য থাকবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা কর আদায় করা। বাকিটা মিলবে রাজস্ব বোর্ড-বহির্ভূত খাত থেকে।
লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, রাজস্ব আদায় হলেও বড় অংকের ঘাটতি থাকবে নতুন বাজেটে। টাকার অংকে যা প্রায় ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি পূরণে সরকার ঋণ নিতে চায় অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ও বৈদেশিক খাত থেকে। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে নিতে চায় এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিতে চায় ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বাজেটে অর্থের জোগান দিতে সরকারকে এখন আগের চেয়ে বেশি ঋণ নিতে হচ্ছে। ফলে বাড়ছে ঋণ পরিশোধের চাপ। পাশাপাশি ডলার-সংকট ও ডলারের বাড়তি দাম সরকারকে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে আরও বেশি চাপে ফেলেছে। আগামী অর্থবছরের জন্য সুদ পরিশোধে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’। অর্থাৎ নানা অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের। আর সে জন্য তিনি দেশের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করতে চান দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
আগামী বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে আনবে সরকার। চলতি অর্থবছরের ৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাজেটকে অধিকতর অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে অর্থ বিভাগের ওয়েবসাইট www.mof.gov.bd এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট www.nbr.gov.bd-এ বাজেটের সব তথ্য ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল যেকোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পাঠ ও ডাউনলোড করতে পারবেন। পাশাপাশি, দেশ বা বিদেশ থেকে [email protected] –এ ইমেইলের মাধ্যমে বাজেট সম্পর্কে মতামত ও সুপারিশ পাঠানো যাবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাজেট উপস্থাপনের পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার (৭ জুন) বেলা ৩টায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে।