ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে অনুশোচনা নেই বলে জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি আরও জানায়, গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের একটি অংশ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে।
‘নতুন বাংলাদেশ’: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী ১০০ দিন-শীর্ষক টিআইবির পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি মাইডাস সেন্টারে গবেষণা তথ্য তুলে ধরা হয়। গবেষণার তথ্য সংগ্রহের সময়কাল ছিল ৫ আগস্ট থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক শাহজাদা এম আকরাম।
বিএনপির বিষয়ে টিআইবির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত না হওয়ার নির্দেশ সত্ত্বেও সরকার পতনের পর বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের একটি অংশ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, হামলা, চাঁদাবাজি, দখল, আধিপত্য বিস্তারে সংঘর্ষ ও হাঙ্গামায় জড়িয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান (মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর), স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান (সিটি করপোরেশন), সড়ক পরিবহন খাতে দখল ও আধিপত্য বিস্তার করেছে। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ১ হাজার ২৩ জন নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিএনপি। এর মধ্যে রয়েছে—কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা, কমিটি থেকে অব্যাহতি, কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান।
আওয়ামী লীগের বিষয়ে পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সরকার পতনের পর শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিকদের পলায়ন ও রাজনীতিতে দৃশ্যমান না থাকা, ভিডিও বার্তা ও সাক্ষাৎকারে বিভ্রান্তিমূলক ও প্ররোচণামূলক বার্তা প্রচার। বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে শেষ করা সম্ভব নয়; ভারত আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে নির্বাচন নিশ্চিত করবে বলে ঘোষণা; শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি; আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেবে এবং এই নির্বাচন তিন মাসের মধ্যে হতে হবে; শেখ হাসিনা কোনো ভুল করেননি; বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা করতে শেখ হাসিনা কাউকে কোনো নির্দেশ দেননি; গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে শেখ হাসিনা আবার দেশে ফিরবেন ইত্যাদি।
টিআইবির মন্তব্যে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ পাচার, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন, বাক-স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার বা কোনো প্রকার অনুশোচনা প্রকাশ করেনি।