শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশে জঙ্গিবাদ নির্মূল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেছেন, “বিশ্বে যেসব দেশে একবার জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে, সেসব দেশে আর জঙ্গিবাদ দমন সম্ভব হয়নি। এটা কেবল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেই সম্ভব হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মৃতি পার্কের সামনে ‘সিরিজ বোমা হামলাকারী বিএনপি-জামায়াত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রু’ ব্যানারে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, “আগস্ট মাস এলেই মনে পড়ে অতীতে আওয়ামী লীগের ওপর কী ধরনের দুর্যোগ নেমে এসেছিল। ১৯৭৫ সালের পর ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অধ্যায়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকতা যদি ২০০১ সালেও থাকত, তবে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হতো না।”
বিএনপিকে জঙ্গিবাদের উত্থানের জন্য দায়ী করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, “যে রাষ্ট্রে একবার জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে, সেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশগুলোর পক্ষেও জঙ্গিবাদ দমন করা সম্ভব হয়নি। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জঙ্গিবাদ প্রায় নির্মূল হয়েছে। জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় দেশের পুলিশ বিভাগ, গোয়েন্দা বিভাগকে শক্তিশালী করা হয়েছে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় মানবাধিকার প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক আইনে অনুস্বাক্ষর দিয়েছে। অনেক বড় বড় রাষ্ট্র এসব স্বাক্ষর করতে ভয় পায়। এখানে শুধু অনুস্বাক্ষর করলেই হবে না, তা মেনে চলতে হয়, জবাবদিহি করতে হয়। সেই ভয় থেকে বড় বড় অনেক রাষ্ট্র তাতে স্বাক্ষর করতে ভয় পায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয় পান না। তিনি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চান।”
শাহরিয়ার আলম বলেন, “জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে আজ থেকে দেড় বছর আগে ১৮৯টি ভোটের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬০টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিল বাংলাদেশ। জামায়াতের আবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বাতিল হয়ে গেছে।”
এ সময় শাহরিয়ার আলম দাবি করেন, বিএনপির পক্ষে আন্তর্জাতিক আইনজীবী টবি ক্যাডমান আবার সক্রিয় হয়েছেন। তিনি বলেন, “সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এটার উদ্দেশ্য প্রশাসন এবং জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো। তবে এই অপচেষ্টা সফল হবে না। তাদের মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আবার পানিতে যাবে।”
বিএনপি আমলে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, “১৯৭৫ -এর পর সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে। সে সময় ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’ হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। ওই সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যেন বিচার না হয়, সে জন্য আইন করে ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে।”
জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন বলে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাহুল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইসহাক মিয়া প্রমুখ।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জঙ্গি সংগঠন জেএমবির দেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা হামলার ঘটনার ১৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে এই কর্মসূচির আয়োজন করে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ।