রাজধানীর পল্লবীতে ২ ছেলে সন্তানকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মো. আহাদ (৪০) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ সময় ওই ব্যক্তি নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) পল্লবীর হাজিরটেকে এ ঘটনা ঘটে। শিশু দুটির বয়স ৭ ও ৩ বছর বলে জানা গেছে। পুলিশের ধারণা, পারিবারিক কলহের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, নিহত দুই শিশুর মা রোজিনা আক্তারের বাসায় গেল সোমবার (১১ নভেম্বর) বেড়াতে আসেন তার বৃদ্ধ বাবা ও মা। ঘটনার সময় শিশুদের অসুস্থ সত্তরোর্ধ্ব নানা জাবেদ আলী পাশের কক্ষেই ছিলেন। তিনি বলেন, “পাশের কক্ষেই দুই সন্তান নিয়ে ছিল আহাদ। আমি শব্দ পেলাম। ছোট ছেলে কান্না করে বলছিল, ‘বাবা মাইরো না, মাইরো না। আর করব না’।”
জাবেদ আলী আরও জানান, তিনি তখনো বুঝতে পারেননি, আহাদ তার ছেলেদের হত্যা করছে। তিনি অসুস্থ থাকায় বিছানা থেকে উঠে যেতে ৩ মিনিটের মতো সময় লেগেছে। তিনি গিয়ে দেখেন, দুই নাতিকে গলা কেটে বিছানায় ফেলে রেখেছে, আহাদ নিজেও বিছানায় শোয়া। এরপর তিনি হামাগুড়ি দিয়ে চিৎকার করে রাস্তায় এসে মানুষজন ডাকেন। স্থানীয়রা গিয়ে এই ঘটনা দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
দুই সন্তানের মা রোজিনা আক্তার গণমাধ্যমে বলেন, আজ ভোরে তার স্বামী কাজ থেকে বাসায় ফেরেন। সকাল ৯টার দিকে রোজিনা তার বেড়াতে আসা বৃদ্ধ মাকে নিয়ে মেসে রান্নার কাজে রওনা দেন। এ সময় তার স্বামী দুই ছেলেকে বাসায় রেখে যেতে বলেন। পরে মেসে পৌঁছানোর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তার কাছে দুই ছেলে মারা গেছে এমন ফোন আসে।
রোজিনা আক্তার বলেন, “আহাদ অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত। সে প্রায়ই আমার কাছে টাকা চাইত, তবে আমার কাছে এত টাকা ছিল না। ঋণের কারণে সে ছেলেদের হত্যা করতে পারে।”
এদিকে গুরুতর আহত আহাদ বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগে ভর্তি আছেন। আহাদের শ্বাসনালী কেটে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান ওই বিভাগের চিকিৎসক ডা. শেখ আব্দুল্লাহ মামুন।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডের কারণ এখনো জানা যায়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তি সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নিহত শিশুদের মা রোজিনা এ ঘটনায় মামলা করেছেন।