• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

২০২৩-২৪ অর্থবছরে এডিপি ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ১১, ২০২৩, ০৬:৩০ পিএম
২০২৩-২৪ অর্থবছরে এডিপি ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এক হাজার ৩০৯টি প্রকল্পের অনুকূলে এ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ মে) প্রধানমন্ত্রী এবং একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।  

সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিৎ কর্মকার। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরেও দেশের সম্পদ, বৈদেশিক অর্থায়ন ও সামষ্টিুক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপি প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, কর্মসৃজন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, অঞ্চলভিত্তিক সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত প্রকল্পসমূহ, দারিদ্র বিমোচন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সংক্রান্ত প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনের গতিশীলতা বজায় রাখা, কর্মসৃজনের আওতা সম্প্রসারণ ও দারিদ্র বিমোচনে লক্ষ্যভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণের যে নীতি-কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের এডিপি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।  

সংবাদ সম্মেলনে সচিব সত্যজিৎ কর্মকার জানান, নতুন এডিপির মধ্যে এক লাখ ৭৯ হাজার কোটি টাকা সরকারের তহবিল থেকে, বৈদেশিক ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৯৪ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় নতুন এডিপির আকার বেড়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থবছর এডিপির আকার ছিল দুই লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা।

সত্যজিৎ কর্মকার জানান, অনুমোদিত এডিপির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে। এ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭৫ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের ২৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এ খাতের মোট ব্যয়ের মধ্যে ৪৪ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৩১ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের বরাদ্দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে। এ বিভাগ বরাদ্দ পাচ্ছে ৩৪ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এডিপিতে বরাদ্দ পেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এ খাতের জন্য বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের ১৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

তিনি জানান, এ খাতের বেশিরভাগ ব্যয় হবে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে। এ খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ বিভাগের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৩৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয়কে ১৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরপর নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা। সেতু বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৬৪ কোটি টাকা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জন্য ছয় হাজার ৪৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রতিরক্ষা, কৃষি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে।

তিনি জানান বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে, মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতুতে বড় বরাদ্দ থাকছে। এছাড়া কর্ণফুলি টানেল, মেট্রোরেল, পদ্মা রেল সংযোগ, যমুনা রেলসেতু ও দোহাজারী–কক্সবাজারের মতো যোগাযোগ ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অবকাঠামোর মতো বেশ কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী অর্থবছরে এগুলোর বাস্তবায়ন কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। চলমান বৃহৎ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী অর্থবছরে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ এডিপি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া বাস্তবায়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন ছয় প্রকল্প। বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ সাবওয়ের (এমআরটি-১) নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু হবে আগামী বছর থেকে। পাশাপাশি মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়নের কাজেও গতি আসবে। এছাড়া হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের মতো প্রকল্প ও বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর মতো বড় ব্যয়ের প্রকল্পের বাস্তবায়নেও গতি বাড়বে।

Link copied!