ভূ-পৃষ্ঠে যতটা তাপমাত্রা অনুভূত হয়, রেললাইনে সেই তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি বেশি হয়। আর অবস্থা যদি এমন হয় যে রেললাইনের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে গেছে, তাহলেই ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশনা আসে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যাওয়ার অবস্থা। ফলে দেশের রেললাইনগুলোতে এই তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে ঠেকছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারচেয়েও বেশি। এমন পরিস্থিতিতে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে রেল কর্তৃপক্ষ সতর্ক হয়ে গিয়ে ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশ দিয়েছে। না হলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রমতে, দেশে বিভিন্ন স্থানের তাপমাত্রার অবস্থা আর রেললাইনের বয়স বিবেচনায় নিয়ে ট্রেনের গতি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটারে সীমিত করার নির্দেশ (স্ট্যান্ডিং অর্ডার বা স্থায়ী আদেশ) দেয়া হয়েছে। আর এই নির্দেশনা বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাখা হয়েছে। কারণ, এই সময়টাতেই রেললাইন বেশি গরম হয়। মূলত, প্রতিবছরই বেশি গরমের সময় এমন নির্দেশনা দেয়া হয়ে থাকে।
সমান্তরাল রেললাইন তৈরি করা হয় মূলত লোহার পাত জোড়া দিয়ে দিয়ে। আর জোড়াগুলোর জায়গাতে সামান্য ফাঁকাও রাখা হয়। যাতে তাপে লোহার সম্প্রসারণ হলে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। তবে অত্যধিক তাপে সম্প্রসারণ বেশি হয়ে গেলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
রেলের মাঠপর্যায়ের কর্মীদের কাছে তাপমাত্রা মাপার যন্ত্র রাখা হয়। কর্মীরা তাপমাত্রা মেপে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেলেই ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশনা চান। একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, তাপমাত্রা বাড়লে গতিসীমা কমানো হয়। আর কমলে স্বাভাবিক গতিতে চলার অনুমতি দেয়া হয়। ট্রেনের গতিসীমা কমানোর বিষয়টি সময়-সময় পরিবর্তন করা হয়।
সূত্রমতে, রেলের পূর্বাঞ্চলসহ (ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) লালমনিরহাট অঞ্চলে মিটারগেজ রেললাইনে গতিসীমা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার আর পশ্চিমাঞ্চলে (রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগের একাংশ) ব্রডগেজ রেললাইনে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার। তবে মালবাহী ও লোকাল ট্রেনগুলোর গতি কম থাকে। আর আন্তনগর ট্রেনের গতি বেশি থাকে।