টানা বর্ষণ ও রাস্তা মেরামতকাজের জন্য গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) ভোর থেকে এ চিত্র দেখা গেছে। তবে দুপুরের পর যানজট কিছুটা কমেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় গত দুই দিন (২৪ ও ২৫ অক্টোবর) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজট ছিল। এ সময় রাস্তায় অনেক পানি ছিল। এতে তীব্র যানজট ছিল। তবে বুধবার রাস্তায় পানি না থাকলেও পরিস্থিতি আরও বেশি খারাপ। ভোর পাঁচটা থেকেই ময়মনসিংহমুখী সড়কের টঙ্গী কলেজ গেট থেকে রাজধানীর বনানী এবং খিলক্ষেত থেকে বোর্ড বাজার পর্যন্ত তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। এতে সকাল থেকেই চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
এই রোডে যানজট সৃষ্টির অন্যতম কারণ হিসেবে বাস র্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) উড়ালসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের চলমান কাজকে উল্লেখ করেছেন যাত্রীরা। তাদের মতে, এই কাজের জন্য রাস্তার দুই পাশের বেশির ভাগ অংশই ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কারণে যানবাহন সঠিকভাবে যেতে পারছে না। এতে দুই পাশেই যানচলাচলে ধীরগতি হচ্ছে।
যাত্রীদের ভাষ্যমতে, বিআরটি প্রকল্পের কাজের কারণে এমনিতেই ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এর ওপর বিভিন্ন অংশ খানাখন্দে ভরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই সেসব খানাখন্দে পানি জমে যায়। সড়কের পাশের নালাও নোংরা-আবর্জনায় প্রায় ভরা। এতে নালার পানি উপচে ওঠে সড়কে। আর এতে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
ঢাকায় আসার পথে গাজীপুর পরিবহনের এক যাত্রী বলেন, “সকাল ৯টায় বাসে উঠেছি। সাড়ে চার ঘণ্টায় মাত্র এয়ারপোর্ট এসেছি। ঢাকায় যেতে আর কতক্ষণ লাগবে, জানি না। যানজটে আমার দুই বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।”
আজমেরী বাসে টঙ্গী থেকে ব্যবসার কাজে গুলিস্তান যাচ্ছেন ফারুক আহমেদ। রাস্তায় ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, “কী বলব ভাই। এই রোডের যানজট দিন দিন বেড়েই চলছে। গত কয়েক মাসের মধ্যে এক দিনও যানজটবিহীন দেখিনি। টঙ্গী কলেজ গেট থেকে মহাখালী আসতেই ৪ ঘণ্টা লেগেছে। গুলিস্তান কখন যাব বলতে পারছি না। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাফিক কর্মকর্তা বলেন, “ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় গত দুই দিন তীব্র যানজট ছিল। কিন্তু আজকের অবস্থা আরও বেশি খারাপ। আজ ভোর পাঁচটা থেকেই ময়মনসিংহমুখী সড়কের টঙ্গীর মিলগেট থেকে রাজধানীর বনানী এবং ঢাকামুখী সড়কের গাজীপুরের বোর্ডবাজার পর্যন্ত যানজট দেখা দিয়েছে। এতে সকাল থেকেই চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে মানুষ।”
টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকার পুলিশ পরিদর্শক শেখ শাহাদাত আলী গণমাধ্যমকে বলেন, “রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। এত করে বলার পরও প্রকল্পের কোনো লোক আমাদের কথা শোনেনি। তারা মিলগেটের অল্প একটু রাস্তা, সেটাও ঠিক করে দেয়নি। যানজট চলে গেছে বোর্ডবাজার পর্যন্ত।”
উত্তরার হাউস বিল্ডিং ট্রাফিক পুলিশ বক্সের পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন বলেন, “আজ ভোর পাঁচটা থেকেই যানজট চলে গেছে প্রায় বনানী পর্যন্ত। গাজীপুর অংশে কোনো গাড়িই ঢোকাতে পারছি না। এভাবে রাস্তায় কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। মানুষ না বুঝে আমাদের গালি দেয়।”