বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠান হবে সন্ধ্যা সাতটায়। ইতিমধ্যে শপথ অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের গাড়ি হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত করেছে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে নতুন মন্ত্রীদের জন্য সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সামনে প্রস্তুত রাখা ৩৬টি গাড়ি দেখা গেছে। সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বিকেল তিনটায় নতুন মন্ত্রীদের বাসায় এসব গাড়ি পাঠানো হবে।
সূত্র বলছে, বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আনুমানিক হিসেবে এসব গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এই গাড়ির সংখ্যা দিয়ে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা কত হবে, তা সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করা ঠিক হবে না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ৩৭ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার শপথ নেবেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন।
বুধবার রাতে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম প্রকাশ করেন। নতুন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন, তা শপথ অনুষ্ঠানের পর জানা যাবে।
২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী থাকছেন নতুন মন্ত্রিসভায়। তাদের মধ্যে বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য ১৭ জন; নতুন ১৯ জন। বর্তমান মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী ৩০ জন সদস্য বাদ পড়ছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন মন্ত্রী, ১৩ জন প্রতিমন্ত্রী ও দুজন উপমন্ত্রী।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তপসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন ৪৮ জন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বাদে মন্ত্রী ২৫ জন, প্রতিমন্ত্রী ১৯ জন এবং উপমন্ত্রী ৩ জন। তপশিল ঘোষণার পর টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী এবং এক প্রতিমন্ত্রী পদত্যাগ করলে মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়ায় ৪৫-এ। ফলে বর্তমান মন্ত্রিসভার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছে না।
নতুন মন্ত্রিসভায় কাউকে উপমন্ত্রী করা হচ্ছে না। টেকনোক্র্যাট হিসেবে দু’জনকে মন্ত্রী করা হচ্ছে। এবারই প্রথম সাতজন মন্ত্রী ও সাতজন প্রতিমন্ত্রী হচ্ছেন। পদোন্নতি পাচ্ছেন তিনজন। আওয়ামী লীগ
সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পুরোনো মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছেন এমন পাঁচজনকে নতুন মন্ত্রিসভায় রাখা হচ্ছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হিসেবে সরকার গঠনের অনুমতি নিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগ এবং নতুন মন্ত্রিসভা গঠনে সম্মতি দিয়েছেন। এর আগে গতকাল সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের প্রথম বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে সংসদ নেতা নির্বাচিত হয়েছেন শেখ হাসিনা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পর একটানা চতুর্থ মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। টানা তিন মেয়াদে সফলভাবে দায়িত্ব পালনের পর চতুর্থবারের মতো তিনি আজ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন। এর মধ্য দিয়ে পঞ্চমবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়বেন শেখ হাসিনা।