বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনাবাহিনীর ৩৩০ জন সদস্য বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি)নিজ দেশে ফিরে যাবেন। সকালে কক্সবাজারের ইনানী ঘাট দিয়ে নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিজিবি। ওই ৩৩০ জন ১১ দিন ধরে বাংলাদেশে আশ্রিত।
বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের এলাকায় গোলাগুলি কমলেও আতঙ্ক এখনো পুরোপুরি কাটেনি। বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার স্থানীয় লোকজনের আশঙ্কা, লড়াইয়ের ময়দানে পিছু হটা মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বাহিনী যেকোনো সময় হারানো এলাকা ফিরে পেতে বিদ্রোহীদের ওপর আক্রমণ শুরু করতে পারে। এই আতঙ্কের মধ্যেই আজ সীমান্তবর্তী এলাকার এসএসসি পরীক্ষার্থীরা বসছে পরীক্ষায়।
একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র বলেছে, সীমান্তের ওপারে জান্তা সরকার ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে চৌকি দখল নিয়ে তুমুল সংঘর্ষের মধ্যে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কয়েক দফায় ৩৩০ জন বিজিপি ও মিয়ানমারের সেনাসদস্য বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। তাদের তমব্রু, ঘুমধুম ও হোয়াইক্যংয়ে আশ্রয় দেওয়া হয়।
ওই ৩৩০ জনের মধ্যে আহত সদস্য রয়েছেন ৯ জন। তাঁদের ৫ জন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৪ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম।
সূত্র জানায়, দুই দেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ে চিঠি চালাচালির পর বৃহস্পতিবার সকালে ওই ৩৩০ জনকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা হয়। তাঁদের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও টেকনাফের হ্নীলা উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজিবির নিজস্ব পরিবহনে করে কক্সবাজারের ইনানি ঘাট দিয়ে মিয়ানমারের জাহাজে করে নিয়ে যাবে সে দেশের নৌবাহিনী।
এ বিষয়ে ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকী বলেন, সকাল ৮টা বা সাড়ে ৮টায় ওই ৩৩০ জন ইনানি ঘাট ছেড়ে মিয়ানমারের উদ্দেশে রওনা হবেন। বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত। তবু এপারে বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। সদস্যসংখ্যা বৃদ্ধিসহ টহল বাড়ানো হয়েছে।
আতঙ্কের মধ্যেই পরীক্ষা
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে এবার ৫০২ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। কিন্তু সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলি এবং এপারে গুলি ও গোলা এসে পড়ার ঘটনায় কেন্দ্রটি ৫ কিলোমিটার দূরে স্থানান্তর করা হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সোহেল মিয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এ এম এম মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত ১২ ফেব্রুয়ারির এক আদেশে ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রটি একই ইউনিয়নের উত্তর ঘুমধুমে দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়েছে। বিদ্যালয় দুটি হলো ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সেখানে ৫০২ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।