নিষিদ্ধ সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূর্যসেন হল শাখার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জেম এইচ রাকিব সরকার ও শামসুন্নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খাদিজা আক্তার উর্মিসহ ৩ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর শাহবাগ থানায় হত্যার চেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাগীব নূর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়া অপর আসামি হলেন, ২৯ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি মো. সাহিল হোসেন।
এর আগে রোববার (২৭ অক্টোবর) রাতে গ্রেপ্তার হওয়া এ আসামিদের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাহমুদ হাসান তাদেরকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, গত ১৫ জুলাই মামলার এজাহারনামীয়সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮০০-১০০০ জন মিলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পরস্পর যোগসাজশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের বহিরাগত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বৈষম্যবিরোধ আন্দোলনের অংশগ্রহণকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপরে ইট, কাঁচ, কাঁচের বোতল, পাইপ, লোহার রড, লাঠি, হকিস্টিক, রামদা, আগ্নেয়াস্ত্র ইত্যাদি দেশি ও বিদেশি অস্ত্র দিয়ে দফায় দফায় হামলা চালায়। আসামিরা ককটেল বিস্ফোরণ করে ও হেলমেট পরে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করেন। ওইদিন আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান, হল, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, টিএসসি, শহীদ মিনার, শহীদুল্লাহ হল, ইত্যাদি এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের গুরুতর আঘাত, ভাঙচুরসহ মেয়ে শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানি করে ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেন।
আবেদনে আরও বলা হয়, গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা আরোপ নিয়ে সারা দেশের শিক্ষার্থীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করেন।
শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলন নিয়ে সাবেক দলীয় সরকার গত ১৪ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকার সম্বোধন করলে শিক্ষার্থীরা শান্তি পূর্ণভাবে এর প্রতিবাদ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ জুলাই রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর বিপরীতে ছাত্রলীগ অবৈধ সমাবেশ করে এবং উক্ত সমাবেশের উদ্দেশ্য যেকোনো মূল্যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদেরকে দমন করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সেদিন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। কিছু শিক্ষার্থীরা আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে আসামিরা জরুরি বিভাগে প্রবেশ করে সেখানেও তাদের ওপর হামলা চালায়। আসামিরা ওই মামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত থেকে তৎকালীন সরকারদলীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নির্দেশে তারা অপরাপর আসামিদের সহায়তায় অত্র মামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।
আসামিদের বর্ণিত নাম-ঠিকানা সন্দেহজনক। যাহা যাচাই বাছাই প্রক্রিয়াধীন। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এবং আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত তাদের জেল হাজতে আটক রাখা একান্ত প্রয়োজন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।