বাংলাদেশে যখন টানা বৃষ্টি আর চারদিকে ঢলের পানি তখন অসময়ে ডম্বুর বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত। এরপর তারা গজলডোবা বাঁধও খুলে দিয়েছে। ফলে নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। এবার তারা পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কা ব্যারাজের ১০৯টি গেটের সব কটি খুলে দিয়েছে।
ফারাক্কা থেকে যে পানি আসে, তা পশ্চিমবঙ্গের গঙ্গা হয়ে বাংলাদেশে রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় পদ্ম নদীতে প্রবেশ করে পাংখা পয়েন্ট দিয়ে। এতে এক দিনে বাংলাদেশে ঢুকবে ১১ লাখ কিউসেক পানি।
এদিকে এই গেট খুলে দেওয়ায় দেশের আরও কয়েকটি জেলায় বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদ-নদী বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভারাইন পিপলের পরিচালক এম আনোয়ার হোসেন বলেন, “ফারাক্কার গেট খুলে দেওয়ার খবরটি আমাদের জন্য বিপজ্জনক। এর ফলে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মানিকগঞ্জসহ আশপাশের জেলাগুলো প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।”
ফারাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার আর দেশ পাণ্ডে বলেন, ফারাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ সব সময় সতর্ক রয়েছে। প্রতিমুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে। খুব কম সময়ের মধ্যে যেভাবে পানির চাপ তৈরি হয়েছে, তাতে ১০৯ গেটের সব কটি খুলে না দিল ব্যারাজের ওপর বড় চাপ তৈরি হচ্ছিল। বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারত। আপাতত ফিডার ক্যানেলে ৪০ হাজার কিউসেক ও ডাউন স্ট্রিমে ১১ লাখ কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে।
এদিকে ২০ আগস্ট থেকে দেশের ১১টি জেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। সেগুলো হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। এসব জেলার ৭৭টি উপজেলা আক্রান্ত হয়েছে। মোট ৯ লাখ ৭৯ হাজার ৯০১টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৫০ লাখ ৯৩ হাজার ৫৩০।