বাংলাদেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চলমান বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিশ্ব নেতাদের অনাকাঙ্খিত বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন নেতৃস্থানীয় ২০০ বাংলাদেশি আমেরিকান নাগরিক।
সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, “আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে- এই বিবৃতিটি কোনো সঠিক তথ্য না জেনেই দেওয়া হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দেওয়া চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ আর দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আক্রমণ করেছে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, কর ফাঁকি ও শ্রম অধিকারের অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগের মামলা এখনো বিচারাধীন এবং কোনো রায় এখনো হয়নি। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে- স্বাক্ষরকারীরা, যাদের অনেকেই আইনের শাসন নিয়ে কথা বলেন- তারাই বাংলদেশে ড. ইউনূসের বিচারের অভিযোগগুলো নিয়ে কোনোকিছু না জেনেই একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।”
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশী আমেরিকানরা আরও বলেন, “আমরা অনেক বছর ধরে ড. ইউনূসের অসদাচরণ পর্যবেক্ষণ করে আসছি। জনসংযোগ ও প্রচার মাধ্যম ব্যবহার করে ড. ইউনূসের প্রতারণার কৌশল সম্পর্কেও আমরা সচেতন। আমরা মার্কিন নাগরিক হিসেবে এসব নিয়ে আগে কখনো অভিযোগ করিনি। আমরা বিশ্বাস করি বিবৃতিতে ড. ইউনূসের পক্ষে স্বাক্ষরকারীরা মিথ্যাচার ও প্রতারণার শিকার হয়েছেন।”
এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক যে- ইউনূসের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীরা শুধুমাত্র ড. ইউনূসের পক্ষে ন্যায় বিচার প্রক্রিয়ার আহ্বান জানিয়েই থামেননি, অধিকন্তু তারা বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়া, আইনের শাসন ও অন্যান্য বিষয়ের কথাও উল্লেখ করেছেন। যেগুলোর সঙ্গে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সম্পর্ক নেই। বিবৃতির কিছু অংশে বলা হয়েছে ‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ হবে এবং নির্বাচন কমিশন দেশের সব বড় দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। আগের দুটি জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।’ এই ধরনের বিবৃতি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অতীতে তথাকথিত প্রধান দলগুলো বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি ছিল অশ্রদ্ধাশীল।”
বিবৃতিতে নেতারা আরও উল্লেখ করেন, “এটা আমাদের কাছে স্পষ্ট যে স্বাক্ষরকারীরা একটি সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে অকারণে বিবৃতি দিয়ে নিজেদের সুনাম ক্ষুন্ন করেছেন। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে তাদের দাবি পুরো বিচার ব্যবস্থাকে অসম্মান করা ও একটি সার্বভৌম জাতির মাননীয় বিচারকদের অমর্যাদার করার সামিল। বাংলাদেশে উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার গত পনেরো-বিশ বছরের তুলনায় অনেক এগিয়ে। লাখ লাখ প্রান্তিক নাগরিকের জীবন মান উন্নয়ন বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশ বিশ্বে একটি রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।”
ড. ইউনূসের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতৃস্থানীয় বাংলাদেশি আমেরিকানরা বলেন, “দলগতভাবে বা স্বতন্ত্রভাবে দেওয়া এই বিবৃতি প্রত্যাহার করে ১৭০ মিলিয়ন বাংলাদেশির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।”
সূত্র: বাসস