ঢাকার সাভারে সোমবার (২৪ এপ্রিল) রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ফুলেল শ্রদ্ধা ও বাধভাঙা কান্না আর আহাজারিতে রানা প্লাজায় নিহতদের স্মরণ করেন স্বজনরা।
সোমবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই ধসে পড়া রানা প্লাজার অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভের সামনে একে একে জড় হন নিহতদের স্বজনরা। এ সময় নিহতদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করতে গিয়ে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এরপর এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত বিচার ও হতাহত পরিবারের ক্ষতিপূরণসহ নানা ধরনের দাবির কথা জানান তারা।
শ্রদ্ধা জানাতে আসা নিহতদের স্বজনরা জানান, এখনও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকের পরিবার ক্ষতিপূরণের অর্থ পায়নি। তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও পুর্নবাসনের কথা থাকলেও সেটা করা হয়নি। তাই তাদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের পাশাপাশি আদালতে বিচারাধীন সব মামলা দ্রুত সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, “১০ বছর আগে এই দিনে হাজারের বেশি শ্রমিক রানা প্লাজা ভবনের নিচে চাপা পড়ে মারা যান। এখনও নিহত শ্রমিক পরিবারের ক্ষতিপূরণ ও পুর্নবাসন এবং রানা প্লাজায় নৃশংস হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি।“
রানা প্লাজায় আহত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের এক জীবনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ ও পুর্নবাসন ব্যবস্থা করা, রানা প্লাজা ধসের জন্য দায়ী সবার বিচারের ব্যবস্থা করা, দেশের শ্রম আইন সংস্কার করে শ্রমিকবান্ধব আইন গড়ে তোলা, দেশে সব শিল্পখাতে আহত শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা ও সরকারি ভাতার ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।
২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টায় সাভারের রানা প্লাজা ভবনের তৃতীয় তলায় পিলার ও দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়। খবর পেয়ে বিজিএমইএ কর্মকর্তারা রানা প্লাজায় আসেন। তারা ওই ভবনের গার্মেন্টস মালিকদের পরামর্শ দেন ‘বুয়েটের ভবন বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করা পর্যন্ত সব কার্যক্রম যেন বন্ধ রাখা হয়’। কিন্তু পাঁচ গার্মেন্টস মালিক এবং তাদের লোকজন ভয়ভীতি দেখিয়ে পরদিন (২৪ এপ্রিল) শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধ্য করেন। এর সঙ্গে যোগ দেন রানা প্লাজা ভবনের মালিক খালেক ও সোহেল রানা। পরে এদিনই (২৪ এপ্রিল) ধসে পড়ে রানা প্লাজা। এ ঘটনায় ১ হাজার ১৭৫ জন পোশাক শ্রমিক প্রাণ হারান এবং ২ হাজারের বেশি শ্রমিক পুঙ্গুত্ব বরণ করেন।