২০২০ সালে সাধারণ ছুটি ঘোষণার আগে ২৩ থেকে ২৬ মার্চ মানুষের ঢাকা ত্যাগ মূলত দেশব্যাপী করোনাভাইরাস বিস্তারের প্রাথমিক কারণ।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) এক গবেষণাপত্রে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
ওই গবেষণাপত্রে করোনার দেশব্যাপী বিস্তার এবং তা প্রতিরোধে বিভিন্ন সময়ে লকডাউন এবং জনসাধারণের গতিবিধির ভূমিকা কেমন ছিল তাও তুলে ধরা হয়েছে।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোপ্রাম থেকে সংগৃহীত ফেসবুক এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের তথ্য অনুযায়ী, গতবছরের ২৩ মার্চ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে জনসাধারণের ঢাকা ত্যাগ করার প্রাপ্ত ডাটার সঙ্গে সার্স-কোভ-২ জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, গত মার্চ ২৩ থেকে ২৬ তারিখের মধ্যে ঢাকা বহির্মুখী যাতায়াতই মূলত দেশব্যাপী করোনাভাইরাস বিস্তারের প্রাথমিক কারণ।
চলতি মাসের ৪ তারিখে ‘জিনোমিক্স, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড মোবাইল ফোন ডেটা এনাবল ম্যাপিং অব সার্স-কভ-২ লিনেজেস টু ইনফর্ম হেলথ পলিসি ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে গবেষণাপত্রটি নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
এতে বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত, দেশব্যাপী করোনাভাইরাস বিস্তারে লকডাউনের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে জনসাধারণের চলাচলের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আইইডিসিআর, আইসিডিডিআরবি, আইদেশি, বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক স্যাঙ্গার জিনোমিক ইনস্টিটিউট, হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং ইউনিভার্সিটি অব বাথ-এর বিজ্ঞানীদের যৌথ উদ্যোগে ২০২০ সালের মার্চ মাসে এই গবেষণাটি শুরু হয়।
প্রাথমিকভাবে মার্চ-জুলাই ২০২০ অন্তর্বর্তীকালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত ৩৯১টি করোনাভাইরাস এর জিনোম বিশ্লেষণ করা হয়।
বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ২০২০ সালে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে এবং পরবর্তীতে আভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের মাধ্যমে আরও ভাইরাসের বিস্তার ঘটে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এপ্রিল ২০২১-এ কনসোর্টিয়াম নভেম্বর ২০২০ থেকে এপ্রিল ২০২১ এর মধ্যে সংগৃহীত আরও ৮৫টি সার্স-কোভ-২ নমুনা সংগ্রহ করে।
এর মধ্যে ৩০টি ছিল লিনিয়েজ বি.১.১.২৫ (৩৫%), ১৩ টি ছিল আলফা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.১.৭, ১৫%), ৪০ টি ছিল বিটা ভ্যারিয়েন্ট (বি.১.৩৫১,৪৭%), ১ টি ছিল লিনিয়েজ বি.১.১.৩১৫, এবং ১ টি ছিল লিনিয়েজ বি.১.৫২৫। প্রথম ঢেউয়ে করোনাভাইরাসের বিস্তারের কারণগুলোর ওপর ভিত্তি করে ভাইরাসের বিস্তার রোধে বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে- যেমন এক জেলা থেকে অন্য জেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
এই গবেষণায় ফেসবুক ডেটা ফর গুড, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি আজিয়াটা লিমিটেড জনসংখ্যা মোবিলিটি তথ্য সরবরাহ করেছে। বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সার্স-কোভ -২ নমুনার সিকোয়েন্সিং-এ সহায়তা করেছে।