আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভুয়া পরিচয়ে টিকটকে ভিডিও বানিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মো. আব্দুর রাকিব ওরফে টিকটক রাজ নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। প্রতারণার পাশাপাশি নারীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, ব্ল্যাকমেইল এবং অর্থ আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দাকার আল মঈন।
এর আগে সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে টিকটক রাজকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২ ও ৫-এর আভিযানিক দল। এ সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন, সাতটি সিমকার্ড, মেমোরি কার্ড, র্যাবের পোশাক ও স্কাপ, ভুয়া আইডি কার্ড, চেইনসহ বাঁশি ও বুট জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত রাকিবের বাড়ি নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুরে। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে। এসএসসি পাশ এই প্রতারক আগে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। তিনি বগুড়ার একটি আবাসিক হোটেলে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন।
র্যাব আরও জানায়, রাকিব গত দুই বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (টিকটক, ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবার) আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভুয়া পরিচয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন। টিকটকে তার দুই মিলিয়নের বেশি ভিউ ও ফলোয়ার আছে। তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে নারীদের প্রলুব্ধ ও প্রতারিত করে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন এবং পরে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করতেন।
কমান্ডার মঈন জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে রাকিব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতো চুল কাটাসহ পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক পরিহিত অবস্থায় ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতেন। এমনকি বিভিন্ন বাহিনীর প্রচারমূলক ভিডিও সুবিধাজনকভাবে এডিট করে সেখানে নিজের অবস্থান দেখিয়ে প্রচার করতেন এই টিকটক রাজ।
খন্দাকার আল মঈন আরও জানান, রাকিব নিজেকে ধনার্ঢ্য পরিবারের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিতেন। এজন্য অন্যের বাড়ি ও আমবাগানের ভিডিও দিয়ে সেগুলো নিজের বলে প্রচার করতেন। এছাড়া টিকটকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে বিজিবির একজন ল্যান্স নায়েক পদবির সদস্য বলে পরিচয় দিতেন। বিজিবি থেকে তাকে র্যাবে পদায়ন এবং র্যাব-১২ তে বদলি করে হয়েছে বলেও মিথ্যা প্রচারণা চালাতেন। এমনকি র্যাব-১২ থেকে র্যাব-৫ এবং সেখান থেকে তাকে ঢাকায় বদলি করা হয়েছে বলেও অনুসারীদের কাছে মিথ্যা প্রচার চালান রাকিব।
এসব মিথ্যা পরিচয় দিয়ে রাকিব প্রতারণার মাধ্যমে ৪টি বিয়ে ও শতাধিক নারীর সঙ্গে বিভিন্নভাবে প্রতারণা করেছেন বলেও জানায় র্যাব। তার নামে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানায় র্যাব।