রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজকে আটক করেছে র্যাব। বুধবার রাত ৮টার দিকে র্যাবের একটি দল রাজধানীর বনানীর জি ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ৪১ নম্বর বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। এ সময় তার বাসায় একটি গোপন কক্ষের সন্ধান পাওয়া যায়। পাশাপাশি মাদকসহ বিকৃত যৌনাচারে ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জামও জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, রাজ সিনেমা ও মডেলিংয়ে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতেন। পরে তাদের ব্ল্যাকমেইলিং করে আরো অনৈতিক কাজে বাধ্য করাতেন। র্যাব আরো জানিয়েছে, এভাবে প্রায় দুই শতাধিক তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন রাজ। যাদের বেশির ভাগের বয়স ১৮ থেকে ২০-এর মধ্যে।
রাজের বনানীর বাড়িতে অভিযানকালে তার কম্পিউটার ও মোবাইলে মিলেছে অনেক অনৈতিক গোপন ভিডিও-ছবি। এছাড়া জব্দ করা হয়েছে তিনটি মেমোরি কার্ড। পাওয়া গেছে পর্নোগ্রাফি তৈরির কনটেন্ট।
আইনশৃঙ্খল বাহিনী জানিয়েছে, রাজ ২০১৪ সালে মিডিয়া জগতে পা রাখেন। এরপরই তার সঙ্গে পরিচয় হয় পরীমনির। এই রাজের হাত ধরেই মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন পরীমনি।
র্যাব জানায়, ১৯৮৯ সালে খুলনার একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাসের পর স্নাতক করতে ঢাকায় আসেন রাজ। এরপর তিনি বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য ও ঠিকাদারি কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি শোবিজ জগতে বিভিন্ন সিনেমা ও নাটকে তিনি নানা চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি নামে-বেনামে প্রযোজনায় যুক্ত হন। রাজ মাল্টিমিডিয়া নামে তার একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পর, ব্যবসায়িক জগৎ ও চিত্রজগতের দুই ক্ষেত্রে তার সংযোগ থাকায় অতিরিক্ত অর্থলাভের আশায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিজ অবস্থানের অপব্যবহার করেন। রাজের ১০ থেকে ১২ জনের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকায়, বিশেষ করে গুলশান, বারিধারা, বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় পার্টি বা ডিজে পার্টির নামে মাদক সেবনসহ নানান অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা করতেন।
এদিকে বুধবার (৪ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিপুল বিদেশি মদ, সিসা সরঞ্জামসহ র্যাবের হাতে আটকের পর রাজের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা হয়েছে। এছাড়া মাদক আইনে আরেকটি মামলা করেছে র্যাব। মাদকের মামলাটি আদালতের নির্দেশে ডিবি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে। এছাড়া তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।