• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মা অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সন্তানকে অপহরণ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২, ০৫:২৮ পিএম
মা অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সন্তানকে অপহরণ
ছবি: সংগৃহীত

অপহরণ হওয়া চার বছরের শিশু ইমরানকে উদ্ধার করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগ। এ ঘটনায় জড়িত থাকা অপহরণকারীকে শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতর নাম ইসমাইল হোসেন ওরফে জীবন ওরফে আকাশ।

দীর্ঘ আট মাস পর শিশু ইমরান তার সঠিক নামটা বলতে পারে না এবং তার মা দাদি ও পরিবারের সদস্য কাউকে চিনতে পারে না। এ এক মর্মান্তিক ঘটনা! মা সন্তানকে চেনে, কিন্তু সন্তান মাকে চিনতে পারে না। অবশেষে নাড়ির টান বেরিয়ে এলো।‌ শিশুটি এক সময় এক এক নাম বলে। যখন শিশুটির মা তাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করলো তখন শিশুটিও তার মাকে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে কান্না শুরু করল।

ডিবি পুলিশ জানায়, ইসমাইল মূলত একটা প্রতারক। সে ছদ্মনামের পরিচয় দিতো। অবশেষে ডিবি পুলিশের এক ছায়া তদন্তে তার আসল রহস্য বেরিয়ে এসেছে। এরপর বিশেষ এক অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিবি দক্ষিণ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আশরাফ হোসেন এসব তথ্য জানান।

ডিসি আশরাফ হোসেন বলেন, “পার্শ্ববর্তী বাসার ভাড়াটিয়া অপহরণকারী ইসমাইল হোসেন জীবন বিভিন্ন সময় রাশিদা খাতুনকে উত্ত্যক্ত ও অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। অভিযুক্ত আকাশ অসৎ উদ্দেশে তার শিশু সন্তানকে চকলেট ও চিপস দিয়ে ঘনিষ্ট হওয়ার চেষ্টা করতো। এক পর্যায়ে গত বছরের ১৫ জুন সন্ধ্যায় শিশুটিতে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজির পর শিশুটির কোনো সন্ধান না পাওয়ায় ভিকটিমের মা রাশিদা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে আসামির মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। পরে রাশিদা খাতুন মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে জানায়, তার ছেলেকে কাগজপত্র করে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে রাশিদা খাতুন তার ছেলেকে পাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় আসামির সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন। 

এদিকে ছেলেকে ফিরে পাওয়ার জন্য দীর্ঘ ৮ মাস ধরে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও উদ্ধার করতে পারেনি রাশিদা।

অন্যদিকে রাশিদা খাতুনের লেখাপড়া না থাকায় এবং কারও কাছ থেকে সঠিক পরামর্শ না পাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তার ছেলেকে উদ্ধারের বিষয়ে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারেনি। বিষয়টি ডিবির দৃষ্টি গোচরে এলে দ্রুততম সময়ে ভিকটিমকে উদ্ধারসহ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, “রাশিদা খাতুন দক্ষিণখানের জামতলা আলমাস উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তিনি উত্তরার বিভিন্ন বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। গত ৬ বছর আগে পার্শ্ববর্তী থানার মো. মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় রাশিদার।”

এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ইসমাইল হোসেন ওরফে জীবন ওরফে আকাশের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

শিশুটিকে অপহরণ করে পাচার করে দেওয়ার কোনো উদ্দেশ্য ছিল কিনা জানতে চাইলে আশরাফ হোসেন সিদ্দিক বলেন, “এখন পর্যন্ত এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে জানা যাবে।”

Link copied!