ভ্রমণের ক্ষেত্রে মানতে হবে দেশগুলোর যেসব শর্ত


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১, ০৫:৩২ পিএম
ভ্রমণের ক্ষেত্রে মানতে হবে দেশগুলোর যেসব শর্ত

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিমান চলাচল চালু হয়েছে। রোববারই প্রথমবারের মত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ঢাকা থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।

এর আগে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশের ওপর অনেক দেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিলেও সম্প্রতি বেশ কয়েকটি দেশ সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে।

এর মধ্যে কয়েকটি দেশ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে এবং অনেকে আবার ভ্রমণের ওপর কড়াকড়ি শিথিল করার কথাও জানিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া দেশগুলো হলো- ভারত, তুরস্ক, অস্ট্রেলিয়া, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ফিলিপাইন।

যে শর্ত দিয়েছে ভারত

৫ সেপ্টেম্বর থেকে এয়ার বাবল চুক্তির ভিত্তিতে ঢাকা-কলকাতা রুটে বিমান চলাচল শুরু হলেও ঢাকা-দিল্লি রুটে বিমান চালু হবে ৮ সেপ্টেম্বর থেকে। এছাড়া বাংলাদেশসহ অন্য দেশগুলোর জন্যও পর্যটন ছাড়া অন্য সব ভিসা চালু করেছে ভারত।
তবে ভারতে ভ্রমণ করতে হলেও কোভিড টেস্ট এবং টিকা দেয়ার প্রমাণপত্র দরকার হবে যাত্রীদের।

টিকার ডোজ সম্পন্ন হলে কোয়ারিন্টিন করতে হবে না তুরস্কে

আগামী শনিবার থেকে বাংলাদেশিদের জন্য তুরস্কের সঙ্গে বিমান চলাচল চালু হওয়ার কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে ঢাকাস্থ তুর্কী দূতাবাস।

তবে তুরস্কে যেতে হলে পৌঁছানো পর্যন্ত তিন দিন বা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোভিডের পিসিআর-এর নেগেটিভ টেস্টের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে।

এছাড়া বাংলাদেশ থেকে যারা তুরস্কে যেতে চায় বা যারা ১৪ দিন ধরে বাংলাদেশে রয়েছে এবং তুরস্কে যেতে চায় তাদের যদি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা তুরস্ক সরকারের অনুমোদিত টিকার দুটি ডোজই সম্পন্ন হয়ে থাকে তাহলে কোয়ারেন্টিন করতে হবে না, বলা হয়েছে তুর্কি দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে। 

অন্যদিকে টিকা দেয়া না থাকলে তুরস্কে পৌঁছানোর পর সেখানকার আবাসেই কোয়ারেন্টিন করতে হবে। দশম দিনে পিসিআর টেস্ট করাতে হবে। ফলাফল নেগেটিভ এলে কোয়ারেন্টিন তুলে নেয়া হবে।

১২ বছরের কম বয়সীদের পিসিআর টেস্ট কিংবা টিকা নেয়ার সার্টিফিকেট দেখাতে হবে না।

ফ্লাইট ক্রু, ট্রাক ড্রাইভার বা জরুরি কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।

কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে অস্ট্রেলিয়ায়

অস্ট্রেলিয়ায় যেতে অবশ্যই কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। একই সঙ্গে বিমানে ওঠার আগে ৭২ ঘণ্টা বা তার কম সময়ের মধ্যে করা কোভিড টেস্টের নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।

অন্য কোনো দেশে ট্রানজিট নিলে সে দেশের নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।

এছাড়া, কোভিড নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকলেও অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছানোর পর ভ্রমণকারীদের সরকারের অনুমোদিত নির্ধারিত ব্যবস্থাপনায় বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

যেসব শর্তে ওমান যাত্রা

গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ওমান।

টাইমস অব ওমানসহ দেশটির স্থানীয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

গালফ নিউজের এক প্রতিবেদন বলা হয়, বাংলাদেশ ছাড়াও এ তালিকায় আরো রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপিন্স, তানজানিয়া, সুদান, ব্রাজিল, সিয়েরা লিওন, যুক্তরাজ্য, লেবাননসহ মোট ২৪টি দেশ।

ওমানের বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এসব সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, সব ওমানি নাগরিক, বাসিন্দা, ভিসা রয়েছে এমন ব্যক্তি বা যারা ওমানে গিয়ে অন অ্যারাইভাল ভিসা পাবেন, তারা সবাই ১ সেপ্টেম্বর থেকে ওমানে প্রবেশ করতে পারবেন।
তবে সে সময় তাদের কোভিড-১৯ এর কারণে জারি করা সব নির্দেশনা মানতে হবে।
ওমানে পৌঁছানোর পর সেখানে কোভিড-১৯ এর দুই ডোজ টিকা নেয়ার কিউআর কোড সম্বলিত সার্টিফিকেট দেখাতে হবে। তবে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেয়ার পর অবশ্যই ১৪ দিন পার হতে হবে।

এছাড়া কোভিড এর পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকলে তাদের কোয়ারেন্টিন করতে হবে না। তবে দীর্ঘ ফ্লাইটের ক্ষেত্রে ওমানের পৌঁছানো পর্যন্ত ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে কোভিড টেস্ট করাতে হবে। আর ৮ ঘণ্টার কম দীর্ঘ ফ্লাইট হলে অন্তত ৭২ ঘণ্টার মধ্যে টেস্ট করাতে হবে।

যাদের কোভিড-১৯ এর পিসিআর টেস্টের নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকবে না, পৌঁছানোর পর তাদেরকে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। কোভিড পজিটিভ আসলে তাকে অন্তত ১০ দিনের আইসোলেশনে থাকতে হবে।

ওমানে পৌঁছানোর পর পিসিআর টেস্ট করালে তার খরচ ওই ব্যক্তিকেই বহন করতে হবে। তবে ১৮ বছরের কম বয়স হলে তাদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশনা প্রযোজ্য হবে না।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুই শর্ত

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার জন্য সব ধরণের ভিসা খুলে দেয়া হয়েছে।

তবে এর জন্য কিছু শর্ত বেধে দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, দুই ডোজ টিকা নেয়া থাকতে হবে।

এছাড়া ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়ার অন্তত ৬ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরেই পিসিআর টেস্ট করাতে হবে।

তবে বিমানবন্দরে পিসিআর টেস্ট করানোর কোন ব্যবস্থা না থাকায় শর্ত পূরণ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোন বাংলাদেশি যেতে পারবেন না।

কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে ফিলিপাইনে

৬ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশসহ ১০টি দেশের ওপর আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে ফিলিপাইন।

এর আগে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে দেশটির সরকার এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।

এ বিষয়ে দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র হ্যারি রক বলেন, ‘‘বৈধ উপায়ে ফিলিপাইনে আসার পর এসব দেশের ভ্রমণকারীদের কোভিড পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইন সংক্রান্ত সরকারি বিধিনিষেধগুলো যথাযথভাবে মানতে হবে। গত ১৩ আগস্ট এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ফের বাড়িয়েছিল ফিলিপাইন।’’  

অন্যদিকে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। তবে তারা বাংলাদেশকে এখনো লাল তালিকায় রেখেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে কেউ যুক্তরাজ্যে গেলে তাকে নিজ খরচে ব্রিটিশ সরকারের তালিকাভুক্ত হোটেলে কোয়ারিন্টিনে থাকতে হবে।

এছাড়া গত মে মাস থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের উপর ভ্রমণ বলবৎ আছে।

Link copied!