প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রথম ধাপে ২০ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটি।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় সুপ্রিম কোর্ট ভবনের জাজেস লাউঞ্জে মিলিত হবেন তারা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব শফিউল আজিমের সই করা এক চিঠিতে গণমাধ্যমকে এ কথা বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে ২০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন আইনজীবী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী।
মতবিনিময়ে অংশ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার এবং সাবেক দুই অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ এবং এ জি মাহমুদ আলীকে। তালিকায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের মধ্যে আছেন ব্যারিস্টার রোকনুদ্দিন মাহমুদ, ফিদা এম কামাল, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, মুনসুরুল হক চৌধুরী, এম কে রহমান এবং ড. শাহদীন মালিক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে মতবিনিময়ের জন্য চিঠি পেয়েছেন উপ-উপাচার্য ড. মাকসুদ কামাল, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান ও ড. আসিফ নজরুল। এছাড়া আছেন সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
চিকিৎসকদের মধ্যে তালিকায় আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে মতবিনিময়ে অংশ নেবেন বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি প্রফেসর মাহফুজা খানম এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারীদের মধ্যে তালিকায় আছেন ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ এবং ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খান।
নতুন সিইসি ও ইসি নিয়োগের লক্ষ্যে সম্প্রতি সংসদ অধিবেশনে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ পাস হয়েছে। এরপর গঠন করা হয় সার্চ কমিটি।
এর আগে মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সার্চ কমিটির দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শেষে ৬০ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানান অনুসন্ধান কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
ন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেছিলেন, “শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এবং বেলা পৌনে ১টা থেকে সোয়া ২টা পর্যন্ত আমাদের বিশিষ্ট নাগরিক বা পেশাজীবী, সাংবাদিকসহ গণ্যমান্য যারা আছেন, তাদের সঙ্গে মিটিং হবে।”
এ ছাড়া রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে আরও একটি বৈঠকের কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শেষে যোগ্যতাসম্পন্ন ১০ ব্যক্তির নাম রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে সুপারিশ করবে অনুসন্ধান কমিটি। সেই ১০টি নাম থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ চূড়ান্ত করবেন রাষ্ট্রপ্রধান।
এদিকে বর্তমান সিইসি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ ফেব্রুয়ারি।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন গঠনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে অনুসন্ধান বা সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সার্চ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন ও কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।