দেশের ক্ষতি করার জন্যই বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। একইসঙ্গে আব্দুল মোমেন বলেন, “লবিস্ট আওয়ামী লীগও নিয়োগ করেছে, তবে তা গুড গভর্নেন্সের জন্য এবং দেশের পজিটিভ ইমেজগুলো তুলে ধরার জন্য।”
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ‘মানবিক নীতি: এখানে এবং এখন প্রদর্শনীর’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় বিদেশে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমাদের তথ্যে দেখা যায়, বিএনপি অনেকগুলো লবিস্ট নিয়োগ করেছে। লবিস্ট নিয়োগ করা আইন বিরোধী না। কিন্তু দেখতে হবে কী কারণে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। যখন কেউ কাউকে টাকা দেয় একটা লোককে কিডন্যাপ করার জন্য, তখন কিন্তু ওই অবজেকটিভটা ঠিক নয় কিংবা যখন দেশের ক্ষতির জন্য অনেকে পয়সা দেয়, তদবির করার জন্য লবিস্ট নিয়োগ করে, সেটাও কিন্তু খুবই অন্যায়।”
আব্দুল মোমেন বলেন, “আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য আছে বিএনপি যে কয়টা লবিস্ট নিয়োগ করেছে এর মূল উদ্দেশ্যটা দেশের ক্ষতি। আপনার-আমার মধ্যে ঝগড়া থাকতে পারে, কিন্তু আপনার-আমার ঝগড়া দেশের স্বার্থ কি না।”
মন্ত্রী আরও বলেন, “বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করেছিল যেন যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি না হয়। তখন আওয়ামী লীগ ভুল পারসেপশানটা চেঞ্জ করার জন্য লবিস্ট নিয়োগ করে। আমরা এটাকে বলি পিআর ফান্ড, নট লবিস্ট নিয়োগ। এগুলো অনেকদিন ধরেই আছে, নতুন নয়। এরশাদের সময় থেকেই এগুলো প্রচলিত। আপনি অন্য লোককে নিয়োগ করছেন দেশের ক্ষতি করার জন্য, কাউকে মেরে ফেলার জন্য, কিডন্যাপ করার জন্য, এগুলো দেশবাসী কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না।”
বিগত ৮ বছর ধরে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ প্রমাণের কথা বলা হচ্ছে, তাহলে এতদিন ধরে বিষয়টি জানা গেলো না কেন- সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “এর প্রমাণ আপনার কাছেও থাকবে ওয়েবসাইট দেখলেই। আপনারা আগে জানলেন না কেন, মিডিয়ার লোকের এটা জানার কথা, এটা আপনাদের দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে। সবই ওয়েবসাইটের মধ্যে আছে, কোনো কিছু লুকানো না।
র্যাব সদস্যদের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে চিঠি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তারা যাচাই-বাছাই করেই নেয়, আমরা এ নিয়ে খুব চিন্তিত না।”
এদিকে সুইজারল্যান্ডের লুসানের ফটো এলিসি জাদুঘরের সহযোগিতায় বাংলাদেশের সুইজারল্যান্ড দূতাবাস, ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রস (আইসিআরসি) ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশে আইসিআরসি’র কার্যক্রমের প্রতিফলন এবং এ দীর্ঘ সময়ে বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডের মানবিক কার্যক্রম ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
এছাড়া ২৫ জানুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত (প্রতি রোববার ছাড়া) প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে এ প্রদর্শনী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড, বাংলাদেশে আইসিআরসি প্রতিনিধি দলের প্রধান কাটজা লরেঞ্জ ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারা জাকের প্রমুখ।