বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর বিভিন্ন প্রকাশনার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, “জাতির পিতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর প্রকাশনা উৎসবে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
এদিন বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর লেখা ১১টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের উন্নয়ন শুধু শহরকেন্দ্রিক না, তৃণমূল থেকে উন্নয়নটা করি। আধুনিক প্রযুক্তির উপরে যে গুরুত্ব দিয়েছিলাম সেখানে আমরা যথেষ্ট সফল। আজকে মানুষ যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন এবং বলতে গেলে এই প্রযুক্তির মাধ্যমেই পৃথিবীটা সবার হাতের মুঠোয় চলে আসছে। বিশ্বকে জানার সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশ আর অন্ধকারে পড়ে থাকছে না বরং বাংলাদেশের মেধাবী ছেলেমেয়েরাও বিশ্বের কাছে নিজেদেরকে আরো উপস্থাপন করতে পারছে। তাদের জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হচ্ছে। প্রযুক্তির শিক্ষায় হচ্ছে সবচেয়ে বড় অবদান।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমার লক্ষ্য ছিল ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে আসা। এরপরে আমরা ২০৪১ সালের লক্ষ্য নিয়েছি। আজকের নতুন প্রজন্ম তারা ৪১ সালের সৈনিক হবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
সরকারপ্রধান বলেন, “জাতির পিতা বাংলাদেশকে একটি সোনার দেশ করতে চেয়েছিলেন। সেই সোনার দেশ গড়তে তিনি সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। সোনার মানুষ এখন তৈরি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করতে পারা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া। সেটা আমরা করতে পেরেছি সেজন্য আমি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। ভোট দিয়ে তারা নির্বাচিত করেছিল বলেই আজকে আমরা সরকার গঠন করতে পেরেছি এবং এ বিরল সুযোগ পেয়েছি।”
আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, “পঁচাত্তরের পর বঙ্গবন্ধু নামটা মুছে ফেলা হয়েছিল। আমাদের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের যে ইতিহাস, সব ইতিহাসই কিন্তু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল প্রায় ২১ বছর। আমাদের কয়টা জেনারেশন আছে যারা হয়তো কিছু জানতেই পারেনি। আজকে লেখা বা প্রকাশনার মাধ্যমে অনেক কিছু নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।”
এছাড়া দেশের শিক্ষা গবেষণা প্রয়োজন উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, “এটা আমাদের শিখিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কারণ তিনি শিক্ষাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ৭০ এর নির্বাচনী ইশতেহার যখন তিনি ঘোষণা দেন তখন ভাষণে তিনি এ কথা বলেছিলেন, শিক্ষায় যে অর্থ ব্যয় হয় সেটা হচ্ছে বিনিয়োগ।”
বৃত্তি ও বিশেষ গবেষণা বৃত্তি চালু রাখার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা একটা বরাদ্দ রেখে দেব যারা গবেষণা, কিছু আবিষ্কার করতে পারবে তাদের জন্য।”
বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে গান, কবিতা ও বিভিন্ন সাহিত্যের বিষয় তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, “পৃথিবীতে এমন কোনো নেতা আছেন কি না আমি জানি না, যার নামে এত গান, এত কবিতা রচনা হয়েছে। আমি বলব রচনাগুলো গল্প, সাহিত্য থেকে শুরু করে বিজ্ঞান থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই কিন্তু বিস্তৃত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানকে মানুষ আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করে। শুধু গ্রহণ করলেই হবে না পরবর্তী প্রজন্ম সেই আদর্শে আদর্শিত হয়ে, এই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে।”
প্রকাশনা উৎসবের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু স্কলার বৃত্তি প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজের চূড়ান্ত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানেও অংশ নেন শেখ হাসিনা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ১৩ জনকে বঙ্গবন্ধু স্কলার বৃত্তি ও ১০০ জনকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কুইজের বিজয়ী হিসেবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন।
সূত্র : বাসস