চাকরি ফিরে পেতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চাকরিচ্যুত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন হাইকোর্টে রিট করেছেন। রিটে দুদকের ৫৪(২) ধারায় তাকে চাকরিচ্যুতির বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার।
রোববার (১৩ মার্চ) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট করা হয়।
এদিন শরীফ উদ্দিনের পক্ষে রিটটি করেন ব্যারিস্টার মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক। রিটে দুদকের সচিব ও চেয়ারম্যান, আইন এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়।
আইনজীবী মিয়া মো. ইশতিয়াক বলেন, “দুদকের ৫৪(২) ধারা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না ও শরীফ উদ্দিনের চাকরি কেন পুনর্বহাল হবে না এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।”
এ বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুদকার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে শুনানি হবে বলে জানান এই আইনজীবী।
চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য দুদকে রিভিউ আবেদন করেছিলেন শরীফ উদ্দিন। এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর তিনি এ আবেদন করেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের ৫৪(২) ধারায় চাকরিচ্যুত করা হয় শরীফ উদ্দিনকে। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ সই করা আদেশে বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২)-তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মো. শরীফ উদ্দিন (উপ-সহকারী পরিচালক) দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যক্রম, পটুয়াখালীকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো।
এরপর এ ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শরীফ উদ্দিনের সহকর্মীরা। পরে তারা ৫৪(২) ধারা বাতিলের দাবিতে দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গঠন করেন।
এছাড়া শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ করায় হাইকোর্টে চিঠি ও রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। ওই রিটের বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্যে ১৫ মার্চ পরবর্তী দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট।
জানা যায়, চট্টগ্রাম দুদক কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনকালে ২০২১ সালের ১৬ জুন ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের পরিচালকসহ ইসির চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন শরীফ উদ্দিন।
একই বছর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে সংলগ্ন কলাতলী বাইপাস রোড এলাকায় পিবিআই অফিস তৈরির জন্য এক একর জমি অধিগ্রহণে জালিয়াতির ঘটনা উঠে আসে শরীফ উদ্দিনের তদন্তে।
কক্সবাজারের মেগা উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জমি অধিগ্রহণের দুর্নীতিতে জড়িত বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে মামলাও করেন তিনি। এ ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে নামে দুদক। পরে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ও বেশ কয়েকটি মামলাও করেছিলেন শরীফ উদ্দিন।