করোনাভাইরাসের টিকা নিতে না পেরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে বিক্ষোভ করেছেন প্রবাসীরা।
শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হাসপাতালের বহির্বিভাগ টিকাকেন্দ্রের সামনে তারা এই বিক্ষোভ করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পরে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন।
চাঁদপুর থেকে টিকা নিতে আসা প্রবাসী নাইমুর রহমান বলেন, “ গত দুই মাস আগে আমি টিকার জন্য নিবন্ধন করেছি। ৬ সেপ্টেম্বর আমার মেসেজ আসছে, এরপর দিন আমি এখানে আসি। ওই দিন আমাকে টিকা দেওয়া হয়নি। তখন আমাকে আজ শনিবার আসার কথা বলে দেয়। কথামতো ফজরের পর আমি টিকাকেন্দ্রে এসেছি। এসে লাইনে দাঁড়াই। এরপর বলছে, আমাদেরকে আজকেও টিকা দেওয়া হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের অধিকাংশ প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ চলে যাচ্ছে। সবাই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোক। তারা সবাই এজেন্সিতে টাকা দিয়ে রাখছে। আমাদের সেইভাবে কোনো আশ্বস্তও করছে না যে, কবে টিকা পেতে পারি।”
প্রাবাসীদের যেন দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় এই দাবি জানান তিনি।
আরেক প্রবাসী কামরুল বলেন, “গত সোমবার আমার মেসেজ এসেছে, আজ শনিবার টিকা নেওয়ার তারিখ উল্লেখ করে। আজ সকালে এখানে এসে লাইনে দাঁড়াই। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আমাদের বলা হয় আজ টিকা নেই।”
তিনি আরও বলেন, “এর আগে যেদিন টিকার জন্য আসি, তখন তারা বলে দেয় যে, আজ আসলে আমরা টিকা পাব। কিন্তু আজকে আমরা আসার পরে তারা আমাদের বলে, টিকা নাই।”
এ সময় অনেকেই দাবি করেন, তাদের শনিবারে টিকা গ্রহণে তারিখ দিয়ে এসএমএস এসেছে।
এ সময় হাসপাতালের বহির্বিভাগে টিকা নিতে না পেরে প্রবাসীরা বিক্ষোভ করার সময় হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের সীমানার বাইরে বের করে দেন। পরে তারা পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যাায়ে তারা দল বেঁধে সেখান থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের চলে যায়।
ঢামেক হাসপাতালে পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, “আমরা কোনো প্রবাসীকেই আজকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার জন্য এসএমএস দিইনি। আজ যারা এসেছেন, তাদের আগের তারিখে টিকা নেওয়ার দিন ছিল। তখন তারা বিভিন্ন কারণে আসতে পারেনি, এখন তারা এসে টিকা নিতে চাচ্ছে। আমাদের এখানে প্রথম ডোজ সিনোফার্মা চালু আছে। আমরা তাদের সিনোফার্মের টিকা নিতে অফার করেছি যে, সিনোফার্ম আমাদের এখানে চলমান, আপনারা এটা নিতে পারেন। ”
তিনি আরও বলেন, “আর যাদের অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার ও মডার্না না নিলে চলবে না তাদেরকে আমরা বলছি, আপনারা খবর রাখেন যখন সরকার এগুলো চালু করবে, তখন আপনারা আসবেন।”
এ বিষয়ে হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, সকালে টিকা নিতে না পারা প্রবাসীরা কিছুটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। পরে আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে টিকাকেন্দ্র থেকে সরিয়ে দিয়েছি।”