• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

গভীর নিম্নচাপটি স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে সন্ধ্যায়


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২১, ০২:৩৮ পিএম
গভীর নিম্নচাপটি স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে সন্ধ্যায়

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার তেমন আশঙ্কা নেই। গভীর নিম্নচাপ অবস্থায়ই সোমবার বিকাল বা সন্ধ্যায় এটি স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুস্পষ্ট নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এটি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উড়িষ্যা উপকূল এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

পূর্বাভাসে আরো বলা হয়, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিও হতে পারে।

ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যমতে, সোমবার সকাল ৯টায় গভীর নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮৫ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আরো জানায়, গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটান সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রালার ও নৌকাগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গভীর সাগরে বিচরণ না করে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, ও চট্টগ্রাম এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের প্লাবিত হতে পারে।

এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এটা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা একেবারেই নেই। স্থলভাগের খুব কাছে আছে এটি। আজকে (সোমবার) বিকাল বা সন্ধ্যা নাগাদ এটি স্থলভাগে উঠে যাবে এবং ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যাবে। এটি বর্তমানে ভারতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।”

জলোচ্ছ্বাসের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল মান্নান আরো বলেন, “আমাদের উপকূলীয় এলাকার নিম্নাঞ্চলগুলো ভরা জোয়ারের সময়ও প্লাবিত হয়। সেখানে গভীর নিম্নচাপের কারণে বাতাসের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে দুই থেকে তিন ফুট অধিক উচ্চতায় প্লাবিত হতে পারে।”

এই আবহাওয়াবিদ আরো বলেন, “এই গভীর নিম্নচাপের কারণে আপাতত বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা একেবারেই কম। কিন্তু উপকূলীয় এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে গভীর সাগরে বিচরণ না করে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। সমুদ্রবন্দরসমূহে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আজ (সোমবার) রাত পর্যন্ত এর প্রভাব থাকবে, কাল (মঙ্গলবার) সকাল থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”

Link copied!