শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। ২৭ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলবে। আগামী ২৮ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট কাটা যাবে রোববার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে।
সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের ৭ থেকে ২০ নম্বর কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কাউন্টারের সামনে টিকিটের অপেক্ষায় রয়েছেন ঈদের ঘরমুখী যাত্রীরা। তারা সারিবদ্ধ হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার চিত্র চোখে পড়েনি।
কাউন্টারে দাঁড়িয়ে থাকা টিকিটের অপেক্ষমাণ এক যাত্রী বলেন, “রাত ৩টা থেকেই এখানে আছি। রাজশাহী যাব। লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। আশা করছি টিকিট পাব। না পেলে আগামীকাল (রোববার) আবারও আসব। তখন আরও আগে আসতে হবে। এখানেই সাহরি করব।”
অনলাইনে টিকিট কেনার কথা জানতে চাইলে আরেকজন যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, “অনলাইনে টিকিট কাটা যাচ্ছে না। সেখানে টিকিট শূন্য দেখাচ্ছে। অনেক ঝামেলা হচ্ছে। এই জন্যই কাউন্টারে এসেছি। অনলাইনে টিকিট কেনার সার্ভিসে আরও ভোগান্তি বাড়ে। কোনো নিশ্চয়তা নেই টিকিট পাব কি না।”
চিলাহাটীগামীর টিকিটপ্রত্যাশী আরের যাত্রী কাউন্টারে দাঁড়িয়ে বলেন, “সকাল সাড়ে ৮টায় এসেছি। টিকিট পাব কি না, জানি না। আজকে না পেলে পরে আবার আসব। একদমই না পেলে বাসের টিকিট কাটব।”
এদিকে রেল মন্ত্রণালয় জানায়, অনলাইনে ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারবে। কাউন্টারে গিয়ে অগ্রিম টিকিট কাটার সুযোগ তো থাকছেই। এ ক্ষেত্রে যাত্রীদের এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি কাউন্টারে প্রদর্শন করতে হবে। একজন সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কিনতে পারবেন।
এবার ঢাকার মোট ৫টি কেন্দ্র কমলাপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, তেজগাঁও, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন) থেকে যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন বলেও জানা যায়।
ঢাকা থেকে বহির্গামী ট্রেনে প্রতিদিন মোট আসন সংখ্যা হবে ২৬ হাজার ৬৬৩টি। যার অর্ধেক টিকিট কাউন্টারে এবং অর্ধেক টিকিট অনলাইনে কিনতে পারবেন যাত্রীরা। ঢাকা থেকে ২টি ঈদ স্পেশাল ট্রেনের আরও ১ হাজার ৫০০ আসনের টিকিটও কাউন্টারে পাওয়া যাবে।
এছাড়া প্রতিটি টিকিট বিক্রয়কেন্দ্রে মহিলা ও প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি করে কাউন্টার থাকবে। প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনে শুধু মহিলা ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য একটি করে স্বতন্ত্র কোচ সংযোজন করা হয়েছে।
ঈদ-পরবর্তী টিকিট বিক্রি শুরু হচ্ছে ১ থেকে ৪ মে পর্যন্ত। ২, ৩ ও ৪ মে এর অগ্রিম টিকিট বিক্রি চাঁদ দেখার ওপর নির্ধারণ করা হবে।
রেল মন্ত্রণালয় জানায়, ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির জন্য় যাত্রীর চাপ সামলাতে ঈদের সাত দিন আগে ২৫ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর কোনো অফ-ডে থাকবে না। এটি যথারীতি ঈদ-পরবর্তী সময়েও কার্যকর হবে। এতে অতিরিক্ত ৯২টি আন্তঃনগর ট্রেন বিশেষ টিপ হিসেবে পরিচালিত হবে। ঈদুল ফিতরের দিন কোনো আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে না।
এর আগে রেলমন্ত্রী জানান, ঈদে ভ্রমণের সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চাহিদা মেটানোর জন্য মোট ৯২টি যাত্রীবাহী কোচ সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২১৮টি লোকোমোটিভ যাত্রীবাহী ট্রেন ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধে বিশেষ পাহারায় থাকছে পুলিশ ও র্যাব এবং জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।