কঠোর লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে বাজার। হু হু করে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য। এক সপ্তাহের ব্যবধানেই চাল, মুরগি, ডিম, কাঁচা মরিচের দামে এসেছে ব্যাপক তারতম্য।
শুক্রবার (৬ আগস্ট) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে চালের দাম বেড়েছে কেজি কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা। বিআর-২৮ চাল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৫২ টাকা, মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, পাইজাম চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৭ থেকে ৭০ টাকা, পোলাওয়ের চাল আগের দামেই ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজার এলাকার চাল বিক্রেতা শামসুল আলম বলেন, “লকডাউন শেষে চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু মজুত কম। তাই সব ধরনের চালে দামও বাড়ছে।”
বেড়েছে মুরগির দামও। প্রতি কেজি সোনালি (কক) মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। অন্যদিকে লেয়ার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩৫ টাকায়।
ডিমের দামও বেড়ে ডজনপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। এখানে প্রায় ১৫ টাকা বেড়েছে। সোনারি (কক) মুরগির ডিমের ডজন ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
দাম বেড়েছে মরিচেরও। গত সপ্তাহে ৮০ টাকায় বিক্রি হওয়া কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি এখন ২০০ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে ১২০ টাকা। শুকনা মরিচ প্রতি কেজি পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়।
এদিকে পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। রসুনের কেজি হয়েছে ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, আদার মূল্য ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। হলুদ গুঁড়ার দাম বেড়ে ১৬০ টাকা থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনির দাম প্রতি কেজি ৭৫ টাকা। এছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়।
তবে বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে সবজির দাম। ইন্ডিয়ান টমেটো ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, লতি ৮০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, চাল কুমড়া পিস ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। শসার দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায় এবং লেবুর হালি পাওয়া যাচ্ছে ১৫ টাকায়।
সবজি বিক্রেতা কাইয়ুম মিয়া বলেন, “কাঁচা মরিচের দাম বাড়ছে। অন্য সবজি কম দামই আছে।” অন্যদিকে মুরগি বিক্রেতা কায়সার বলেন, “ঢাকা মানুষ ফিরছে। মুরগির চাহিদাও বাড়ছে। খাবারের দোকানগুলো খুলছে। সেখানেও মুরগির চাহিদা বাড়ছে। দাম সপ্তাহখানেকের মধ্যে আরও কিছুটা বাড়তে পারে।”
তেজগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার আসা ক্রেতা প্রিয়ম সাহা বলেন, “সাধারণ মানুষের আয় কমেছে। দীর্ঘ সময় ধরেই লকডাউন চলছে। প্রয়োজনীয় জিনিস কিনব, তা-ও সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। ৮০ টাকার কাঁচা মরিচ এখন ২০০ টাকা কেজি। দাম বাড়লেও একটা সামঞ্জস্য থাকতে হয়। অন্তত চাল ও তেলের দামে সরকারের নজর দিতে হবে। তদারকি করলে আমরা সাধ্যের মধ্যে কিনতে পারব।”