তিন দফা চেষ্টায় ১২ ঘণ্টার চেষ্টায় করে জোড়া শিশু লাবিবা-লামিসাকে নতুন জীবন দিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা। সংবাদ সম্মেলনে এই সফল অস্ত্রোপচারের খবর জানান চিকিৎসক দলের প্রধান ও শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আশরাফ-উল হক।
৩৮ জন চিকিৎসকের দল এই অস্ত্রোপচারে যুক্ত ছিলেন। অধ্যাপক আশরাফ-উল হক বলেন, ‘‘এই শিশুদের যোনীদ্বার, পায়ুপথ ও প্রস্রাবের রাস্তা একসঙ্গে জোড়া লাগানো ছিল। তাই কোন ক্ষতি না এগুলো পৃথক করা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা সেটা সফলভাবে করতে সক্ষম হয়েছি।”
সোমবার প্রথমে শিশু দুটির যোনীদ্বার ও মলদ্বার পৃথক করেন চিকিৎসকরা। জোড়া মেরুদণ্ড আলাদা করাও বেশ কষ্টকর ছিল বলে জানান চিকিৎসকরা। বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে শিশু দুটোকে আলাদা করা হয়।
অধ্যাপক কাজল আরও বলেন, “ওদের মেরুদণ্ড নীচের দিকে জোড়া লাগানো ছিল। স্পাইনাল কর্ডে আঘাত লাগলে স্থায়ীভাবে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু নিউরোসার্জনদের দল ওই অস্ত্রোপচারও সফলভাবে শেষ করেছেন।”
চিকিৎসকরা জানান, পৃথক হওয়ার পর দুই শিশুই পা নাড়তে পারছে। তাদের স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিংবা দুজন পঙ্গু হয়ে গেলে এমনটা সম্ভব হত না।
২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার যদুনাথপাড়ায় জন্ম লাবিবা-লামিসার। বাবা মো. লালমিয়া পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। মাতা মনুফা আক্তার গৃহিণী।
জন্মের মাত্র নয় দিন পর ঢামেক হাসপাতালে শিশু দুটিকে নিয়ে আসে তাদের পরিবার। এরপর থেকেই চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছিল।
গত বছর ২৮ নভেম্বর ঢামেকের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয় শিশুদের। অস্ত্রপচারের পর প্রথমে জ্ঞান ফেরে শিশু লাবিবার। অস্ত্রোপচারের পর দুজনই সুস্থ আছে বলে জানা গেছে।