রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা নবদম্পতি বেঁচে গেছেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে থাকা কেউ বেঁচে নেই। একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন তারা।
নবদম্পতিরা হলেন হৃদয় (২৬) ও তার স্ত্রী রিয়া মনি (২১)। বর্তমান তারা উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গণমাধ্যমকে হৃদয়ের খালাত ভাই রাকিব হোসেন জানান, শনিবার হৃদয়-রিয়ার বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে বাবাসহ স্বজনদের নিয়ে আশুলিয়া খেজুর বাগানে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন হৃদয়। পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
রাকিব হোসেন আরও জানান, দুর্ঘটনায় হৃদয় ও তার স্ত্রীকে উদ্ধার করা গেলেও ভায়াডাক্টচাপা পড়ে মারা গেছেন হৃদয়ের বাবা রুবেল, শাশুড়ি ফাহিমা (৪০), ফাহিমার বোন ঝরনা (২৮), ঝরনার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)।
আরও পড়ুন… বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরছিল পরিবারটি
এর আগে, সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উত্তরার জসিম উদ্দীন এলাকায় আড়ংয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, দুর্ঘটনার পর প্রাইভেটকার থেকে নিহতদের কোনোভাবেই বের করা যাচ্ছিল না। সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। গার্ডারের নিচে প্রাইভেটকার চাপা পড়ে থাকায় মরদেহ বের করা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে এক্সেভেটর দিয়ে গার্ডার সরিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভসের ঢাকা জোন-৩ এর উপ-সহকারী পরিচালক সাইফুজ্জামান বলেন, “১৫০ টন ওজনের গার্ডার হওয়ায় উদ্ধার কাজ শুরু করা যায়নি। যখন ক্রেন ও এক্সেভেটর এসেছে তখন আমরা গার্ডার সামান্য উঁচু করে ওই গাড়ি থেকে দুই শিশু, দুই নারী এবং একজন পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করি।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিআরটি প্রকল্পের জন্য নির্মিত গার্ডার একটি ক্রেন দিয়ে সরানো হচ্ছিল। এ সময় গার্ডারটি হঠাৎ করে রাস্তায় চলমান প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে যায়। গার্ডারটি ক্রেন থেকে ছুটে যায়নি, বরং ক্রেনের একপাশ উল্টে যায়।
এদিকে দুর্ঘটনার পর উত্তরা এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দেয়। ঘটনাস্থলে সাধারণ মানুষের ভিড় থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের তথ্য সংগ্রহসহ কাজ করতে অনেক হিমশিম খেতে হয়েছে।