সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামি টেকনাফ থানা পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী এবং টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সর্বোচ্চ ও দৃষ্টান্তমূলক সাজা চায় পরিবার।
এ ছাড়া অন্য আসামিদেরও অপরাধের ভিত্তিতে সাজা হবে বলে প্রত্যাশা সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের।
বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলার রায় আগামীকাল সোমবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল ঘোষণা করবেন।
এ রায়ের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ হবে বলে আশা প্রকাশ করে নিহত সিনহার বোন শারমিন বলেন, “অপরাধী যেই হোক না কেন, অপরাধ করলে কেউ আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না- এ রায়ের মাধ্যমে সেটি প্রতিষ্ঠিত হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।”
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম বলেন, “আমরা অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। ষড়যন্ত্র করে এবং পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। তাই আমরা আদালতে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছি।”
এছাড়া পুলিশি আবরণে, আইনি আবরণে এমন নিষ্ঠুর ঘটনা যাতে আর না ঘটে, যেন আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা থাকে; রায়ের মাধ্যমে তার প্রতিফলন দেখতে চাই আমরা বলেও জানান তিনি।
এর আগে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে খুন হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনার পাঁচদিন পর ওই বছরের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ লিয়াকত আলীকে প্রধান আসামি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে দ্বিতীয় আসামি করে ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্তের পর ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গত বছরের ২৭ জুন ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর গত বছরের ২৩ আগস্ট কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা শুরু হয়। এ প্রক্রিয়া শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। মোট ৬৫ জন সাক্ষী এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন।