• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২২, ০৮:২২ পিএম
‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ’
ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু শাহাদাত বরণের পর তার যোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, “নতুন প্রজন্ম আজ মন খুলে আঁকতে পারছে, মনের ভাষা প্রকাশ করছে ছবি এঁকে। বীরের জাতি হিসেবে নতুন প্রজন্ম যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারে।”

শনিবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মুজিববর্ষ স্মারকগ্রন্থ ‘অনশ্বর পিতা’র মোড়ক উন্মোচন ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “খুব কাছ থেকে আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। তখন আমি ডিগ্রি ফাইনাল বর্ষের ছাত্র। আমি উদগ্রীব থাকতাম কখন তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন। তিনি (বঙ্গবন্ধু) সবসময় প্রস্তুত থাকতেন। বারবার জেলেও গেছেন। দিনক্ষণ হিসেব করে কারা কর্তৃপক্ষ পরে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু ৩ হাজার ৫৩ দিন জেলেই কাটিয়েছেন। কারাগারে বসেই তিনি অনেক ইতিহাস লিখে গেছেন। আবার জেল থেকে বাইরে বের হলেই প্রান্ত থেকে প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কারাগারের রোজনামচা লিখে গেছেন। সিক্রেট ডকুমেন্টসে তারই প্রমাণ পাচ্ছি। এসবিতে রক্ষিত ছিল সে সিক্রেট ডকুমেন্ট।”

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, “১৯৪৮ সালে কায়েদে আজম যখন ঘোষণা করেন উর্দুই হবে রাষ্ট্রভাষা, তখন তার মুখের উপর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, নো নো বাংলা হবে রাষ্ট্রভাষা। জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার দৃশ্য তিনি মানতে পারেননি। তখন থেকেই তার শুরু জেলে যাওয়া-আসা।”

আসাদুজ্জামান খান আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু সত্যকে উপলব্ধি করতেন। আমাদের স্বাধীন হতেই হবে৷ পাকিস্তান নামক দেশ হবার পর থেকেই সেটি তিনি লালন করা শুরু করেন। কারণ এক শোষক থেকে আরেক শোষকের হাতে আমরা পড়ে গিয়েছিলাম। পাকিস্তান মানে শোষণের ইতিহাস। তিনি তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের প্রান্ত থেকে প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র হয়েছিলাম।”

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “মার্চের ৩ তারিখে আমরা পতাকা উড়িয়ে জানিয়েছিলাম আমরা স্বাধীন দেশ চাই, নিরঙ্কুশ বিজয়ের পরও বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছিল না। তাই তিনি ছাত্র নেতাদের বলতেন; তোমরা তৈরি থাকো, যুদ্ধ ছাড়া আমাদের গতি নাই।”

মন্ত্রী আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। তবে তিনি আলোচনার পথ তিনি বন্ধ রাখেননি। অপেক্ষা করলেন। ২৪ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেছেন, রক্তের উপর পা দিয়ে সিদ্ধান্ত বদলাতে পারবো না। ২৫ মার্চ পর্যন্ত কিছু হচ্ছিল না। আলোচকরা চলে যাচ্ছিল। রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম আমরা, পায়ের স্যান্ডেল খুলে ছুড়ে মেরে প্রতিবাদ করেছিলাম। ওই রাতেই অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলো। সবকিছু তছনছ করে দেবার পরিকল্পনা থেকে। আমরা তেজগাঁওয়ে গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ করলাম। প্রথম বাধা পেলো জয়বাংলা স্লোগানে।”

এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, “রাজারবাগ-পিলখানায় ভাগাভাগি করে দল চলে যাই। মৃত্যু অবধারিত জেনেও সম্মুখ যুদ্ধ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বীর বাঙালি৷ এই দুঃসাহস আমরা পেয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে। যে শক্তিতে আমরা বলিয়ান। রাজারবাগের পুলিশও সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। শুধু রাজারবাগ নয়, সারাদেশেই সহযোগিতা করেছিল। তখন থেকে শুরু লড়াই, মুক্তিযুদ্ধ। সে লড়াইয়ে আমরা ৯ মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলাম।”

এ বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে আজকে হৃদয় নিঙড়ানো ভালবাসায় স্মরণ করি। স্মরণ করি বঙ্গমাতাকে। ছাত্রদের ১১ দফার আন্দোলনে যখন বঙ্গবন্ধুকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল। বঙ্গমাতা তখন বলেছিলেন- তোমরা জোরালো আন্দোলন করো যাতে বঙ্গবন্ধু গোলটেবিল বৈঠকে মুক্ত বঙ্গবন্ধু হিসেবে যেতে পারে।”

এ সময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ, পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (এএন্ডআই) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, ডিএমপি কমিশনার মোহ. শফিকুল ইসলাম, র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম আ্যন্ড অপস্) কৃষ্ণ পদ রায়।

এছাড়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত আইজিপি স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!