রাজধানীর রামপুরায় নিরাপদ সড়ক দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে পুলিশের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বেলা ১২টার দিকে ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী রাস্তার পাশে মানববন্ধনে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে পুলিশ সদস্যরা বাঁধা দেয়। এতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী সেখান থেকে চলে যান।
তবে খিলগাঁও মডেল কলেজের দুই ছাত্রীকে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। পরে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের নাম-পরিচয় লিখে নিয়ে সেখান থেকে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকা দুই শিক্ষার্থী একজন সোহাগী সায়মা। তিনি খিলগাঁও মডেল কলেজের শিক্ষার্থী। গত দুইদিন রামপুরা ব্রিজের ওপর হওয়া আন্দোলনে তাকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।
সোহাগী সায়মা বলেন, “আমরা কালকেও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও পুলিশ বার বার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে, আন্দোলনকে নষ্ট করার চেষ্টা করছে। আজকেও আমরা খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থী হাতে গোনা ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী ছিলাম। পুলিশ তাতেও বাধা দেয়।”
খিলগাঁও মডেল কলেজের এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, “আজ মানববন্ধনে দাঁড়াতে আসা শিক্ষার্থীদের আমরা বার বারই বলেছি, তোমরা এমনভাবে দাঁড়িও না, যাতে মানুষ চলাচল করতে সমস্যা হয়। আমরা বলেছি, আজকে রাস্তা অবরোধ কেন, গাড়ি অবরোধ কেন, মানুষ পর্যন্ত যাতে হাঁটতে সমস্যা না হয়, সেই ব্যবস্থা করেই আমরা কর্মসূচি পালন করবো। আমরা রাস্তায় কোনো রকমের বিশৃঙ্খলা চাই না। এজন্য আজকে আমরা মানববন্ধন করবো, দুই মিনিট নীরবতা পালন করে চলে যাবো। আমরা কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে জড়ো হলাম আর পুলিশ এসে আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করে। যেটা পুলিশের সাজে না। পুলিশের ব্যক্তিত্ব এমন হলে দেশ কখনো টিকে থাকতে পারে না। পুলিশ আমাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছে, বলছে এখানে থাকবে না। যেনো রাস্তা তাদের বাপের সম্পত্তি।”
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার নুরুল আমিন জানান, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে লোকজন এসে এখানে শৃঙ্খলার নষ্ট করতে পারে। তাই এখানে কোনো কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না।
সম্প্রতি এক দিনের ব্যবধানে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় এক শিক্ষার্থী ও এক সংবাদকর্মী নিহত হওয়ার পর নিরাপদ সড়কসহ ১১ দফা দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে রাজধানীর রাজপথ। সর্বশেষ সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাতে রামপুরায় যাত্রীবাহী বাস চাপায় স্থানীয় একরামুন্নেছা স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন ইসলাম দুর্জয় নিহত হওয়ার পর সেই আন্দোলন আরো জোরালো হয়।
গত মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) এবং বুধবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার কারণে বেলা ১২টা থেকে ১টার পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন এবং নিহত শিক্ষার্থীর স্মরণে নীরবতা পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।