দেশের বরেণ্য সাহিত্যিক, মুক্তিযোদ্ধা, নারীনেত্রী, উদীচী চট্টগ্রামের সভাপতি, শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মুশতারী শফীর জামাতা আব্দুল্লাহ জাফর।
এদিকে মুশতারী শফীর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনে।
১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারি বেগম মুশতারী শফী জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কয়েকটি অসাধারণ গ্রন্থ লিখেছেন।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : ‘মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রামের নারী’, ‘চিঠি, জাহানারা ইমামকে’ ও ‘স্বাধীনতা আমার রক্তঝরা দিন’। এছাড়াও তিনি প্রবন্ধ, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনি, কিশোর গল্পগ্রন্থ, স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থও লিখেছেন।
১৯৬০-এর দশকে তিনি চট্টগ্রামে ‘বান্ধবী সংঘ’ নামে নারীদের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এ সংগঠন থেকে তিনি ‘বান্ধবী’ নামে একটি নিয়মিত পত্রিকা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি ‘মেয়েদের প্রেস’ নামে একটি ছাপাখানা চালু করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনন্য ভূমিকা পালনের জন্য বাংলা একাডেমি ২০১৬ সালে তাকে ‘ফেলোশিপ’ প্রদান করে। এছাড়া তিনি গত বছর ২০২০ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ‘রোকেয়া পদক’।
ব্যক্তিগত জীবনে বেগম মুশতারী চট্টগ্রামের চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ শফীর স্ত্রী। সাত সন্তানের জনক-জননী তারা।
১৯৭১ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মোহাম্মদ শফি ও তার ছোট ভাই এহসান পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে শহীদ হন।
এছাড়া স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাতে শফী পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুশতারীর দাদা কাজি আজিজুল হক ছিলেন একজন বাঙালি উদ্ভাবক ও ব্রিটিশ ভারতীয় পুলিশে কর্মরত একজন কর্মকর্তা। তিনি হস্তছাপ রক্ষণের মাধ্যমে অপরাধী সনাক্তকরনের উদ্ভাবক হিসেবে পরিচিত।