• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

লোকসানি পাটকল চালু না করার সুপারিশ


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২২, ০৮:৪৭ পিএম
লোকসানি পাটকল চালু না করার সুপারিশ

বছরের পর বছর লোকসানে থাকা রাষ্ট্রীয় পাটকলগুলো চালু না করার পক্ষে মত দিয়েছে জাতীয় সংসদীয় কমিটি। 

কমিটি বলেছে, এসব পাটকল চালু করে সরকারের অর্থ অপচয়ের যৌক্তিকতা নেই। এছাড়া কমিটি সড়কের তুলনায় কয়েকগুণ চওড়া ব্রিজ না করে বাস্তবতার নিরিখে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার পরামর্শ দিয়েছে।

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয় দুটি নিয়ে আলোচনা হয়।

এছাড়া বৈঠকে বস্ত্র ও পাট প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়।

কমিটির সভাপতি উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন, এ.বি.তাজুল ইসলাম, আহসান আদেলুর রহমান, ওয়াসিকা আয়শা খান এবং খাদিজাতুল আনোয়ার অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকের বিষয়ে সভাপতি আব্দুস শহীদ বলেন, “তিনটি জুট মিল উন্নয়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সরকার সেই পাটকলগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। নতুন করে সরকারিভাবে পাটকল চালু হবে কী হবে না, এই নিয়ে অনেক প্রশ্ন এসেছে। আমরা বলেছি- এগুলো চালু হবে কিনা সেটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে আমরা মনে করি, যেগুলো লাভজনক নয়, তা চালু করে সরকারের অর্থ অপচয় করার কোনও যৌক্তিকতা নেই।”

কমিটির সভাপতি বলেন, “ছোট-ছোট হলেও কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি না করে। আমাদেরও মনে হয়েছে এগুলো জনস্বার্থে কার্যকর হবে না। কিছু প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল শেষ হলেও কিন্তু বাস্তবায়ন পাঁচ শতাংশ হয়নি। মন্ত্রণালয়ও যুক্তি দেখিয়েছে। তারা বলেছে, এগুলো প্রয়োজন ছাড়াই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা রিওয়ার্ড ও পানিশমেন্টের সুপারিশ করেছি। বলেছি কেউ দোষ করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনতে, আবার কেউ ভালো কাজ করলে তাকে পুরষ্কৃত করতে বলেছি।”

মুজিবকেল্লার নির্মাণ কাজে কম অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি কাঙ্ক্ষিত নয়। অবশ্য কিছু বাস্তব সমস্যাও ছিল। বুয়েট যে রিপোর্ট দিয়েছিল তা সঠিক ছিল না। পরে ডুয়েট থেকে সেটা সঠিকভাবে করা হয়েছে। প্রকৌশলীরা একেকজন একেকভাবে রিপোর্ট দিলে বাস্তবায়ন কর্তৃপক্ষের তো সমস্যা হবেই। আমরা ভবিষ্যতে যুক্তপূর্ণ উপায়ে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে বলেছি।”

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের গ্রামীণ সড়কে ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণে চলমান প্রকল্পের প্রসঙ্গ টেনে শহীদ বলেন, “প্রকল্পে ১৫ মিটার অর্থাৎ ৪৫ ফুট ব্রিজ নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যে জায়গায় ব্রিজ হচ্ছে সেখানকার রাস্তা আছে ৬ ফুট। রাস্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য হচ্ছে না। এজন্য আমরা পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহযোগিতা নিয়ে একটি কারিগরি রিপোর্ট করে দুই মাসের মধ্যে কমিটিতে পাঠাতে বলেছি।”

কমিটি দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যানবাহন দেওয়ার সুপারিশ করেছে উল্লেখ করে সভাপতি বলেন, “এসিল্যান্ড, ইউএনও, কৃষি কর্মকর্তারা গাড়ি পেলে তারা পাবেন না কেন? তারা তো সারাদিনই কাজ করেন।”

এদিকে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে সরকারিভাবে পরিচালিত টেক্সটাইল মিল পরিচালনার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাঁত শিল্পের উন্নয়ন আশানুরূপ না হওয়ায় আরও যত্নবান হওয়ার সুপারিশ করা হয়। চলমান প্রকল্পের কাজ শুরুর পূর্বে এর গুরুত্ব বিবেচনা করে সঠিক কর্মপরিকল্পনা তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়।

অন্যদিকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সরাসরি জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ায় পরিবেশ বিপর্যয়ের বিষয়ে আরও সজাগ থাকার সুপারিশ করা হয়। 

Link copied!