মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের জনগণকে সুন্দর ও উন্নত জীবন প্রদানের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভার (ভার্চ্যুয়াল) সূচনা বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। এর আগে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “স্বজন হারাবার বেদনা নিয়ে একটা লক্ষ্য স্থির করেই পথ চলেছি, যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা এ দেশ স্বাধীন করেছেন সেই আদর্শকে আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে, করতেই হবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের জীবনে আর্থসামাজিক উন্নতি নিশ্চিত করা, তাদের জীবনকে উন্নত করা, জীবন যেন সুন্দর হয়, সম্মানজনক হয়, বিশ্বের বুকে বাঙালি যাতে মাথা উঁচু করে চলতে পারে, এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আর এটাই জাতির পিতা সব সময় চাইতেন, বলতেন। সে স্বপ্নটা অধরা থাক তা আমি চাই না।”
সরকারপ্রধান বলেন, “তার সরকারের ১৩ বছরের রাষ্ট্র পরিচালনায় বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে এবং আরও সামনে এগিয়ে গিয়ে একদিন আমরা উন্নত দেশে পরিণত হব।
সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশকে এখন আর কেউ করুণার চোখে দেখে না, সম্মানের চোখে দেখে। অন্তত এইটুকু পরিবর্তন আমরা গত ১৩ বছরে করতে সক্ষম হয়েছি। এই মর্যাদা ধরে রেখে আগামীতেও সামনে এগিয়ে যেতে হবে।”
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই তার সরকার সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। সে ক্ষেত্রে পরিকল্পনা কমিশনের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। করোনা মহামারিতে সমগ্র বিশ্ব যখন স্থবির হয়ে পড়েছিল তার মধ্যেও তার সরকার অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে।”
সরকারপ্রধান আরও বলেন, “দেশকে তার সরকার ডিজিটাল করতে পেরেছিল বলেও করোনার মধ্যেও একনেক, এনইসিসহ বিভিন্ন সভা ভার্চ্যুয়ালি আয়োজনের মাধ্যমে উন্নয়নের ধারাটা সরকার অব্যাহত রাখতে পেরেছে।”
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে সময়কে কাজে লাগানোয় সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস এই মাসেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছেন। যিনি আমাদের স্বাধীনতার পাশাপাশি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা এনে দিয়েছেন। এই মাসের ৭ মার্চ জাতির পিতা যে ভাষণ দিয়েছেন, তা আজ আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। আর ২৬ মার্চ তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।”
এ সময় ৭১-এর অসহযোগ আন্দোলনের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, “অগ্নিঝরা এই মার্চের প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “জাতির পিতা মাত্র সাড়ে ৩ বছর সময় পেয়েছিলেন, কিন্তু সেই অল্প সময়ে মধ্যেই একটি প্রদেশকে রাষ্ট্রে পরিণত করে তিনি আমাদের স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছিলেন। সেই সময় সংবিধান তৈরির পাশাপাশি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দেওয়া এবং পরিকল্পনা কমিশন গঠন করে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নেন তিনি।”
এছাড়া অথচ ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও জাতির পিতার খুনিচক্র ক্ষমতায় এসে দেশকে সামনের দিকে না নিয়ে আরও পিছিয়ে দেয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সূত্র : বাসস