• ঢাকা
  • বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন কমিশন আইনে ফাঁক আছে : জাপা মহাসচিব


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২২, ০৩:১৬ পিএম
নির্বাচন কমিশন আইনে ফাঁক আছে : জাপা মহাসচিব

সম্প্রতি জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’-এ ফাঁক রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু।

শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ৮ নম্বর হলে আয়োজিত এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। ‘নির্বাচন কমিশন আইন নির্বাচন ব্যবস্থার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে’ শীর্ষক এই ছায়া সংসদের আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, “নির্বাচন বিষয়ে আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা প্রায় ২৫ বছর। আমার ধারণা, বাংলাদেশের যে নির্বাচন কমিশন, সেখানে নির্বাচন কমিশন আইন খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ না। কারণ আইনটিতে ফাঁক আছে। নির্বাচন কমিশন আইন যেভাবে পাস করা হয়েছে, সেভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।”

জাপার মহাসচিব আরও বলেন, “সংবিধানে আছে নির্বাচন কমিশন যখন নির্বাচন পরিচালনা করে, তখন অধীনস্থরা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ শুনতে বাধ্য। কিন্তু না শুনলে কী হবে, সেটি উল্লেখ নেই। অর্থাৎ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ না শুনলে নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার নেই। তাই জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আমরা এ বিষয়ে একটি আইন করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলাম।”

মুজিবুল হক চুন্নু আরো বলেন, “সত্য কথা হলো এই নির্বাচন কমিশন আল্লাহর ফেরেশতা দিলেও বাংলাদেশের নির্বাচনে তারা কিছুই করতে পারবে না। কারণ পুলিশ নির্বাচন কমিশনের কথা শোনার কোনো পরোয় করে না। তারা পরোয়া করে প্রধানমন্ত্রীর। তাই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে সিস্টেমটা পরিবর্তন করতে হবে।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন, কোনো বিতর্ক উঠতে পারে না উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, “জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, তিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ঘোষণা দিয়েছেন। ওনাকে আমরা শ্রদ্ধা করি। ওনার একটা বিরাট অবদান রয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু জাতির পিতার বিষয়ে কোনো বিতর্ক উঠতে পারে না। সেই বিতর্ক যদি বিএনপি করে, তাহলে আওয়ামী লীগ কী করে বসবে? ২১ আগস্টের বিষয়ে আওয়ামী লীগ কী করে বসবে—এটা তাদের বিষয়। এই দুই-চারটি বিষয়ে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে যতদিন পর্যন্ত সুরাহা না হবে ততদিন পর্যন্ত জাতীয় পার্টি কেন, জাতিসংঘের মহাসচিব বা যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট আনলেও এই দুই দলকে একসঙ্গে বসানো যাবে না।”

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে ছায়া সংসদে বিতর্ক প্রতিযোগিতা করে সরকার দল ও বিরোধী দল। সরকার দলের পক্ষে বিতর্ক করে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া এবং বিরোধী দলের পক্ষে বিতর্ক করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বিতার্কিকরা। প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় বিরোধী দল। পরে তাদের মাঝে ট্রফি ও সনদ বিতরণ করা হয়।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর রাজনৈতিক দল ও জনগণের আস্থা না থাকলে নির্বাচন ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখোমুখি হয়। নির্বাচনকালীন সরকারের অধীন ছাড়া বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো কোনো নির্বাচনের যাবে না বলে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। যদি তাই হয় তাহলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান দলগুলোর অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এই সংকটের একটি সমাধান দ্রুত বের করা দরকার।”

ছায়া সংসদে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে চারজনের নাম প্রস্তাব দেওয়া হয়। তারা হলেন সাবেক মন্ত্রী পরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ, এনবিআর-এর সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবদুল মজিদ ও নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন।
 

Link copied!